কুমিল্লাকে হারিয়ে সিলেটের চমক

|

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ১২ রানে হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। আগে ব্যাট করতে নেমে বেনি হাওয়ালের ঝড়ো ৬২ রানের ওপর ভর করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রানের লড়াকু পুঁজি পায় সিলেট। লক্ষ্য তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে কুমিল্লা। একপ্রান্ত আগলে রেখে টি-টোয়েন্টিতে নিজের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন লিটন দাস। কুমিল্লা অধিনায়কের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আন্দ্রে রাসেলও তবে সেটি জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানে থামতে হয় কুমিল্লাকে। ফলে, একঝাঁক তারকা খেলোয়াড় নিয়েও আসর থেকে ছিটকে যাওয়া সিলেটের কাছে পরাজয় বরণ করতে হলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ভালো শুরুর দেখা পায় সিলেট। এবারের পুরো বিপিএলেই ব্যর্থ হয়েছেন সিলেটের ওপেনাররা। এদিন জাকির হাসানের সঙ্গে সদ্য যোগ দেয়া লুইস মিলে খানিকটা স্বস্তি এনে দেন। উদ্বোধনী জুটিতে তারা দু’জনে মিলে যোগ করেন ৪০ রান। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে উইকেট হারায় তারা।

সুনীল নারিনের বলে তারই হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৮ রান করা জাকির। আরেক ওপেনার লুইস বিদায় নেন ২৫ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে। তিনে নেমে আরও একবার ব্যর্থ হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পুরো বিপিএল ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা শান্ত এদিন আউট হন ১২ রানে। কয়েক ম্যাচ পর একাদশে ফেরা ইয়াসির আলী রাব্বি ২ রানের বেশি করতে পারেননি।

দারুণ শুরুর পর ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে সিলেট যখন বিপাকে তখন হাল ধরেন মোহাম্মদ মিথুন এবং বেনি হাওয়েল। সিলেটের অধিনায়ক একপ্রান্ত আগলে রেখে খেললেও হাওয়েল শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্বক। ২৮ রান করা মিঠুনকে ফিরিয়ে তাদের দু’জনের ৭৭ রানের জুটি ভাঙেন নারিন। পরের ওভারেই অবশ্য মাত্র ২৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন।

শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন হাওয়েল। তাকে সঙ্গ দেয়া আরিফুলের ব্যাট থেকে আসে ৭ রান। তাতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রানের পুঁজি পায় সিলেট। কুমিল্লার হয়ে দু’টি করে উইকেট নেন সুনীল নারিন এবং রিশাদ হোসেন। একটি উইকেট পান মুশফিক হাসান।

১৭৮ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে স্কোরবোর্ডে আসে কেবল ৩৯ রান। এই রান করতেই কুমিল্লা হারিয়ে বসে ওপেনার ইমরুল কায়েস ও তাওহিদ হৃদয়কে। ৩ রানের বেশি করতে পারেননি অভিজ্ঞ ইমরুল। তিনে নামা তাওহিদ হৃদয় থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তানজিম হাসান সাকিবের অফ স্টাম্পের বাইরের স্লটের বলে মিড অফে ক্যাচ দেন ১৭ রান করা হৃদয়। তবে এদিন ব্যতিক্রম ছিলেন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস।

শুরুতে ধীরগতির হলেও সেট হয়ে স্ট্রোক্সের ফোয়ারা ছুটান লিটন। ২৬ বলে ২২ রানে থাকা লিটন ৩৬ বলে ছুঁয়েছেন ৫০, যা এবারের বিপিএলে লিটন দাসের দ্বিতীয় ফিফটি। অর্থাৎ ফিফটি হাঁকাতে পরের ১০ বলে করেছেন ২৮ রান। ইনিংসের ১০তম ওভারে অ্যাকশনে আসা আরিফুল হক লিটনের সামনে খরচ করেন ২২ রান।

ইনিংসের ১৫ তম ওভারের তৃতীয় বল, ১০ রানে থাকা জনসন চার্লসের সহজ ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা সানজামুল ইসলাম। নতুন জীবন পাওয়া চার্লস অবশ্য পরের ওভারেই বিদায় নেন। শফিকুল ইসলামের বলে উইকেটকিপার মিথুনের গ্লাভসে ক্যাচ দেন। ১০ রানে জীবন পাওয়া চার্লস সাজঘরে যান আর কেবল দুই রান করতেই। মঈন আলী পাঁচ বল মোকাবিলা করেও একটি রান করতে পারেননি। বেনি হাওয়েলের অফ কাটার স্লোয়ারে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন ইংলিশ এই ব্যাটার।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে দরকার ছিল ৩৭ রান। বেনি হাওয়েল ১৯ তম ওভারের প্রথম ডেলিভারিতেই পেতে পারতেন ৮৪ রানে থাকা লিটন দাসের উইকেট। দৌড়ে এসে বল তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন তানজিম সাকিব, সিঙ্গেল নিলে স্ট্রাইক পান রাসেল। হাওয়েলের এই ওভারের বাকি পাঁচ বল খেলে আন্দ্রে রাসেল নেন ১১ রান। শেষ ওভারে কুমিল্লার দরকার ছিল ২৫ রান, ওভারের প্রথম ডেলিভারিতেই ৮৫ রানে থাকা লিটন দাসের স্টাম্প ভাঙেন তানজিম সাকিব। ওভারের শেষ বলে ফেরান আন্দ্রে রাসেলকে। জোড়া উইকেট নিয়ে মাত্র ১২ রান খরচ করেন সাকিব। 

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply