দিল্লিকে গুড়িয়ে দিয়ে কলকাতার হ্যাটট্রিক জয়

|

ছবি: সংগৃহীত

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) এবারের আসরের ১৬ তম ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আগে ব্যাট করতে নেমে সুনীল নারিনের ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ৩৯ বলে ৮৫ রানের সঙ্গে অংক্রিশ রঘুবংশীর ২৭ বলে ৫৪, আন্দ্রে রাসেলের ১৯ বলে ৪১ ও রিংকু সিংয়ের ৮ বলে ২৬ রানের ক্যামিওতে আইপিএল ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭২ রান সংগ্রহ করে কলকাতা। লক্ষ্য তাড়ায় রিশাভ পান্ত ও ট্রিস্টিয়ান স্টাবস জোড়া হাফ সেঞ্চুরি করলেও  সেটা কেবলই দিল্লি ক্যাপিটালসের হারের ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৬ বল বাকি থাকতেই ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় দিল্লি।

বুধবার (৩ এপ্রিল) বিশাখাপত্তনমে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই তাণ্ডব চালাতে থাকেন কলকাতার দুই ওপেনার। যদিও ফিল সল্টকে বিধ্বংসী হয়ে উঠতে দেননি অ্যানরিখ নরকিয়া। ডানহাতি এই পেসারের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্টাবসের দারুণ ক্যাচ আউট হন ১৮ রানে। যদিও কলকাতার ব্যাটারদের ঝড় থামানো যায়নি। দিল্লির বোলারদের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালান নারিন। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছেন তরুণ ক্রিকেটার অংক্রিশ রঘুবংশী।

তাদের দু’জনের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৮৮ রান তোলে কলকাতা। তাদের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম ১০ ওভারে আসে ১৩৫ রান, আইপিএলে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। চার-ছক্কার পসরা সাজিয়ে মাত্র ২১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নারিন। অন্যপ্রান্তে রঘুবংশী হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ২৫ বলে। এদিকে মাত্র ৪৪ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েন নারিন এবং রঘুবংশী। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির সুযোগ ছিল নারিনের হাতে। তবে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলা নারিনকে সেঞ্চুরি করতে দেননি মার্শ। ডানহাতি এই মিডিয়াম পেসারের বাউন্সারে উইকেটের পেছনে থাকা পান্তের গ্লাভসে ক্যাচ দেন ৭ ছক্কা ও ৭ চারে ৮৫ রান করা নারিন।

হাফ সেঞ্চুরির পর ২৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন রঘুবংশী। তরুণ এই ব্যাটারকে আউট করেন নরকিয়া। এরপর ঝড় তোলেন রাসেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে এই ব্যাটার খেলেন ১৯ বলে ৪১ রানের টর্নেডো ইনিংস। একেবারে শেষদিকে এসে ৮ বলে অপরাজিত ২৬ রান করেন রিংকু। দিন ছয়েক আগে ২৭৭ রান করা হায়দরাবাদকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল কলকাতার সামনে। ২৬৪ রানে শেষ ওভার শুরু করেছিল কলকাতা। কিন্তু ইশান্ত শর্মা প্রথম ৩ বলের মধ্যে রাসেল ও রমনদিপ সিংকে ফেরান, ওভারে দেন মাত্র ৮ রান। ফলে ২৭২ রানে থামতে হয় কলকাতাকে। শেষ পর্যন্ত দিল্লির সান্ত্বনা হয়ে থেকেছে হয়তো সেটিই, কলকাতাকে ২৭৭ পর্যন্ত যেতে না দেয়া!

জয়ের জন্য ২৭৩ রান তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দিল্লি। ঝড়ো শুরু করলেও ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই কলকাতাকে উইকেট এনে দেন বৈভব অরোরা। ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে মিড অনের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন পৃথ্বী। তবে বরুণ চক্রবর্তীর ঝাঁপিয়ে পড়ে নেয়া দারুণ এক ক্যাচে ৭ বলে ১০ রানে ফিরতে হয়েছে দিল্লির ওপেনারকে।

তিনে নামা মার্শ রানের খাতাই খুলতে পারেননি। স্বদেশী মিচেল স্টার্কের শরীর বরাবর এক ডেলিভারিতে কভার পয়েন্ট দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটার। তবে রমনদীপ সিংয়ের ওপর দিয়ে খেলতে পারেননি। কভার পয়েন্টে দাঁড়িয়ে রমনদীপ ক্যাচ নিতেই সাজঘরে ফিরতে হয় মার্শকে। পরের ওভারে আউট হয়েছেন অভিষেক পোরেলও। বৈভবের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে থাকা নারিনের হাতে ক্যাচ দেন রানের খাতা খুলতে না পারা এই ব্যাটার।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে আউট হয়েছেন ওয়ার্নারও। স্টার্কের পঞ্চম স্টাম্পের গুড লেংথ ডেলিভারিতে বটম এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন তারকা এই ওপেনারকে। ওয়ার্নারকে ফিরতে হয় ১৩ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলে। ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দিল্লির হাল ধরার চেষ্টা করেন পান্ত ও স্টাবস। পঞ্চম উইকেটে ৪৭ বলে ৯৩ রানের জুটি গড়েন তারা।

২৫ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন পান্ত, স্টাবস করেন ৩২ বলে ৫৪। তবে তাদের ইনিংস পার্থক্য গড়তে পারেনি কোনো। ওই দু’জনের পর আর কেউ দুই অঙ্কও ছুঁতে পারেননি দিল্লির। শেষ পর্যন্ত ১৭.২ ওভারে ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় দিল্লি। কলকাতার হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন বরুণ ও বৈভব। এছাড়াও পেসার স্টার্কের শিকার করেন ২ উইকেট।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply