নাজমুলের পরিবর্তে মিরাজুলের জেল খাটার ঘটনায় ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট

|

বাঁয়ে যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান, ডানে তার বদলে সাজা খাটা মিরাজুল ইসলাম।

রাজধানীর উত্তরায় নাজমুলের পরিবর্তে মিরাজুলের জেল খাটার ঘটনায় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা বিচারক ও জেল সুপারসহ ৬ জনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট। যমুনা টেলিভিশনের রিপোর্ট দেখে আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) এই আদেশ দেন আদালত।

যমুনা টেলিভিশনে অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশিত হলে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টে আবেদন জানান। পরে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের আদালতে বিষয়টি শুনানি হয়।

শুনানিতে আইনজীবী বলেন, সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে স্পষ্ট, প্রকৃত ব্যক্তির পরিবর্তে অন্য একজন জেলে গিয়ে জামিনের পরে আপিল দায়ের করে। যার মাধ্যমে প্রকৃত আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। ফলে আদালতের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।

পরে আদালত বলেন, আসামি আত্মসমর্পণ করাকালীন তার প্রকৃত পরিচয় কীভাবে শনাক্ত করা হয়েছিল, সে বিষয়ে অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ঢাকার বিচারক মো. মোরশেদ আলমকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দিতে হবে। লিখিত জবাব দিতে হবে কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপারকেও। আসামিকে কী কী প্রক্রিয়ায় গ্রহণ কয়া হয়েছে, তার প্রমাণপত্র-হলফনামাসহ বিস্তারিত জানাতে বলেছেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, মামলার নথি থেকে জানা যায়– ২০২০ সালের আগস্ট মাসে উত্তরায় একটি বাসায় অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল, গাঁজাসহ আটক করা হয় আনোয়ার হোসেন নামে একজনকে। তবে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন মাদক চক্রের মূলহোতা।

মাদক উদ্ধারের এ ঘটনায় দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। বিচারে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় পলাতক ওই ব্যক্তিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামি মাদক কারবারের মূলহোতা ঢাকার উত্তরার ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান।

২০২৩ সালের ৯ আগস্ট নাজমুল পরিচয় দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন গাজীপুরের মিরাজুল ইসলাম। জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফলে নাজমুলের পরিবর্তে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান মিরাজুল। ১১ দিন জেল খাটার পর ওই বছরের ২০ আগস্ট তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। বড় অঙ্কের টাকা দেয়ার চুক্তিতে নাজমুলের পরিবর্তে মিরাজুল জেলে যান বলে জানা যায়।

যদিও চুক্তিমতো সব টাকা পাননি জেল খাটা মিরাজুল। জামিনে বেরিয়ে এসে টাকা চাইতে গেলে উল্টো ৫০ পিস ইয়াবা দিয়ে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় তাকে।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply