পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের প্রাণহানি

|

প্রতীকী ছবি।

দেশের পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে একদিনে নারীসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় চার, রাঙামাটিতে তিন, কক্সবাজারে দুই এবং খাগড়াছড়ি একজন ও সিলেটে একজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।

এদিন বিকেলে কুমিল্লায় বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়। জেলার বুড়িচং, দেবিদ্বার, সদর দক্ষিণ ও চান্দিনা উপজেলায় এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু ঘটে।

নিহতরা হলেন, বুড়িচং উপজেলার পাঁচোড়া নোয়াপাড়া গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে মো. আলম হোসেন (২০) ও দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে মোখলেছুর রহমান (৫৮), জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নের উত্তর সূর্যনগর গ্রামের আতিকুল ইসলাম (৫০) ও চান্দিনা উপজেলার বরকইট ইউনিয়নের কিছমত-শ্রীমন্তপুর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে দৌলতুর রহমান (৪৭)।

সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ-প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানান, বজ্রপাতে মারা যাওয়া প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।

রাঙামাটিতে নিহত ৩:

তীব্র তাপদাহের পর রাঙামাটির বৃষ্টিপাত স্বস্তির হলেও এই জেলায় বজ্রপাত কেড়ে নিয়েছে তিনজনের প্রাণ। জেলার পৃথক তিনটি স্থানে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালে জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপকারী ইউনিয়নের বড়াদম এলাকায় বজ্রপাতে মুসলিম বাহারজান (৫৫) নামের একজনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও বজ্রপাতে ১ টি গবাদি পশুও মারা যায়। একই উপজেলার সাজেকে সকালে বজ্রপাতে তনিপালা ত্রিপুরা (৩৭) নামে এক নারী মারা যান।

অন্যদিকে সকাল সাড়ে আটটার দিকে রাঙামাটি শহরের সিলেটি পাড়া এলকায় কাপ্তাই হ্রদে বরশি দিয়ে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে মো. নজির (৫০) গুরুতর আহত হলে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কক্সবাজারে মারা গেছেন দুই লবণ শ্রমিক:

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বজ্রপাতে প্রাণ গেছে দুই লবণ শ্রমিকের। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার মগনামা ও রাজাখালী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতেরা হলেন, রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়ার জামাল উদ্দিনের ছেলে আরফাতুর রহমান (২০) ও মগনামা ইউনিয়নের কুদাইল্যাদিয়া গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে দিদারুল ইসলাম (৩৯)। তবে দিদারুল কয়েক বছর ধরে শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবনিয়া এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, ভোরে পেকুয়ায় তীব্র বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় মগনামার কুদাইল্যাদিয়া এলাকায় মাঠের লবণ কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান দিদারুল। অন্যদিকে রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়া এলাকায় মাঠের লবণ গর্তে ঢুকিয়ে সংরক্ষণের জন্য পলিথিন মোড়াতে গিয়ে প্রাণ যায় আরফাতুর রহমানের।

কানাইঘাটে ধান কাটতে গিয়ে কৃষকের মৃত্যু:

সিলেটের কানাইঘাটে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা গেছেন এক কৃষক। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার দিঘীরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের শফিক হাওরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গুরুতর আহত হন আরও দুজন। মৃত কৃষকের নাম বাবুল আহমদ (৪৮)। তিনি উপজেলার দক্ষিণ কুয়রের মাটি এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।

বজ্রপাতে আহতরা হলেন—একই এলাকার ফাহিম আহমদ (১৭) ও প্রদীপ বিশ্বাস (২০)। স্থানীয়রা জানান, দুপুরে বাবুল হাওরে ধান কাটতে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ভাতিজা ফাহিম আহমদ ও প্রদীপ বিশ্বাসসহ আরও দুজন। হঠাৎ বজ্রপাত তাদের ওপর পড়লে সকলেই গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা ধান কাটা জমি থেকে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসকরা বাবুলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

খাগড়াছড়িতে প্রাণ গেছে একজনের মৃত্যু:

খাগড়াছড়িতে বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলেও মাটিরাঙ্গায় বজ্রপাতে ১২ বছর বয়সী মো. ইয়াছিন (১২) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মাটিরাঙ্গা উপজেলার পুরাতন বর্ণাল এলাকার ইব্রাহিম পাড়ার মো. ইউছুফ মিয়ার ছেলে তিনি।

স্থানীয়রা জানায়, সকালে মাটিরাঙ্গা উপজেলার বর্ণালে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এসময় বাড়ির আঙ্গিনায় খেলা করার সময় বজ্রপাতের শিকার হয় ইয়াছিন। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিলে তাকে মৃত ঘোষণা করে।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply