শেষ বলের নাটকীয়তায় রাজস্থানকে ১ রানে হারালো হায়দরাবাদ

|

শেষ দুই ওভারে জেতার জন্য রাজস্থান রয়্যালসের দরকার ২০ রান আর সানরাইজার্স হায়দরাবাদের পাঁচ উইকেট। ব্যাটিংয়ের স্ট্রাইক প্রান্তে ধ্রুব জুরেল, অপরপাশে ক্যারিবিয়ান তারকা রাভম্যান পাওয়েল। ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্যাট ক্যামিন্স প্রথম বলেই তুলে নেন জুরেলের উইকেট। তার বলে অভিষেক শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জুরেল। এরপর ক্রিজে আসেন রবীচন্দ্রন আশ্বিন। প্রথম বলে সিঙ্গেল দিয়ে স্ট্রাইক পরিবর্তন করেন আশ্বিন।

স্ট্রাইক প্রান্তে যান পাওয়েল। তাকে পেয়ে তৃতীয় বলটি স্লোয়ার দেন ক্যামিন্স তবে পাওয়েল বল বুঝতে পারেননি। এলো ডট। চতুর্থ বলটি দিলেন ওয়াইড লেন্থের ইয়ার্কার। ব্যাট চালিয়েও বলের কানেকশন পাননি পাওয়েল। পঞ্চম বলটি এবার স্লো বাউন্স করেন ক্যামিন্স এটিও পাওয়েলের ব্যাটে লাগেনি। রাজস্থানের জন্য ১২ বলে ২০ রানের লক্ষ্য এসে দাঁড়ায় সাত বলে ১৯। তখনই মনে হচ্ছিল ম্যাচটি মনে হয় হায়দরাবাদের দিকে ঝুকে গেছে। তবে এরপরই কিছুটা নাটকের পরিবর্তন। টানা তিনটি ডট বল দেয়া ক্যামিন্স এবারও ব্যাটার পাওয়েলকে ইয়ার্কার দিয়ে বোকা বানাতে চেয়েছিলেন। তবে সেটি হয়ে যায়, লো ফুলটস। ক্যারিবিয়ান তারকা পাওয়েলের পেশির শক্তিতে বল গিয়ে পড়ে গ্যালারির ভেতরে। বিরাট ছক্কায় ব্যবধান নিয়ে আসেন ১৩-তে।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য এবার রাজস্থানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩। বোলিংয়ে আসেন ভারতীয় পেসার ভুবনেশ্বর কুমার। প্রথম বলে অশ্বিন সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন পাওয়েলকে। ওভারের দ্বিতীয় বলে লংঅনে ঠেলে দিয়ে দ্রুতগতিতে দুইরান তুলে নেন পাওয়েল। তৃতীয় বলটিকে স্কুপ খেলে মারেন চার। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে আবারও ডাবল। যদিও পঞ্চম বলে রান আউটের সুযোগ ছিল। তবে বাজে থ্রোর কারণে উইকেটরক্ষক স্টাম্প ভাঙার আগেই পাওয়েল পৌঁছে যান। এরপরই নাটকীয়তা! শেষ বলে দুই রান দরকার রাজস্থানের। এমন সময় ইয়ার্কার বল দেন ভুবনেশ্বর। তবে সেটি লো-ফুলটস হয়ে যায়। যেটির টাইমিং করতে পারেননি পাওয়েল। শট খেলতে গিয়ে মিস করে বসেন, বল গিয়ে লাগে তার পায়ে। জোরালো আবেদনে আউটের আঙুল তুলতে দেরি করেননি আম্পায়ার। এতে খুব কাছে এসেও হারের হতাশায় পোড়ে রাজস্থান আর ফঁসকে যাওয়া ম্যাচে জয় পেয়ে বাঁধভাঙা উল্লাসে মাতে হায়দরাবাদের খেলোয়াড়রা।

যদিও আইপিএলের ৫০তম ম্যাচে ২০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা রাজস্থানের ব্যাটারদের ক্যাচ মিস করে ‘জেতার সুযোগ’ তৈরি করে দিয়েছিল হায়দরাবাদের ফিল্ডাররাই। যশস্বী জয়সোয়ালের তখন ৭ বলে ৭ রান। মার্কো ইয়ানসেনের বলে সোজা প্যাট কামিন্সের হাতে ক্যাচ দেন জয়সোয়াল। তবে সহজ সেই ক্যাচ ফেলে দেন হায়দরাবাদের অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। এরপর নটরাজনের বলে রিয়ান পরাগের ক্যাচ ফেলেন অভিষেক। পরাগ তখন ১৫ বলে ছিলেন ২৪ রানে।

শেষ পর্যন্ত জয়সোয়াল ও পরাগ দুজনই ফিফটি করে ফেরেন। জয়সোলায় ৪০ বলে ৬৭ রান করেন। তার ইনিংসটি ৭ চার ও ২ ছয়ে সাজানো ছিল। আর পরাগ ৪৯ বলে খেলেন ৭৭ রানের ইনিংস। তিনি মারেন ৮টি চার ও চারটি ছ্ক্কা। এর আগে, রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ভুবনেশ্বরের বলে জস বাটলার ও সাঞ্জু স্যামসনকে হারায় রাজস্থান। সেই বিপদের মধ্যে দলীয় ২১ রানে জয়সোয়াল ও ৫৮ রানে পরাগের ক্যাচ ফেলায় দুশ্চিন্তা বাড়ছিল হায়দরাবাদ শিবিরে। যদিও শেষ পর্যন্ত একরানের জয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচলো এসআরএইচ।

এদিন, টসে জিতে আগে ব্যাট করা সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ২০১ রান পেরোতে পেরেছে মূলত তিনজনের ব্যাটিংয়ে ভর। ফিফটি করেছেন ট্রাভিস হেড ও নীতিশ কুমার। আর ১৯ বলে ৪২ রানের এক ঝোড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন হেইনরিখ ক্লাসেন।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply