উত্তরপ্রদেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে ৮৭ জনের মৃত্যু

|

সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা প্রতিনিধি:

ভারতের উত্তরপ্রদেশের হাথরসে একটি হিন্দু সনাতন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮৭ জনের। আহত হয়েছেন আরও অনেকেই। মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। মঙ্গলবার (২ জুলাই) হাথরসে হিন্দু ধর্মের ‘সৎসঙ্গ’-এর অনুষ্ঠান শেষ হতেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। আর তখনই ঘটে এমন ঘটনা। কিছু বুঝে উঠার আগেই ভিড়ের চাপে প্রাণ হারান অসংখ্য মানুষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর হাথরাসের এক দলিত কিশোরীর গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা ভারত। দেশ ও বিদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও আলোচিত হয় হাথরাসের নাম। মঙ্গলবার সেই হাথরাসের রতিভানপুরে শিবপুজোর সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান ছিল। যেখানে যোগ দিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। অনুষ্ঠান শেষে হঠাৎই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। হুড়োহুড়ির মধ্যে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরোনোর চেষ্টা করেন অনেকে। তখনই ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হন বহু মানুষ। এনডিটিভির খবর অনুযায়ী এতে ৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। আহতদের বেশিরভাগকেই সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ট্রাকে এবং বাসে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের ইটাহর এসএসপি রাজেশ কুমার সিং জানিয়েছেন, হাথরাস জেলার সিকানদ্রারাও থানার অন্তর্গত ফুলরাই গ্রামে ভোলেবাবা সৎসঙ্গের অনুষ্ঠানেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। তিনি জানান, মরদেহ উদ্ধার হওয়াদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া কর্মকর্তাদের দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। এডিজি আগ্রা এবং আলিগড়ের পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে এই দুর্ঘটনার তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন মূখ্যমন্ত্রী।

জানা গেছে, মুঘলাগড়ি গ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী লক্ষ্মীনারায়ণ চৌধরী এবং সন্দীপ সিংহ। ইতিমধ্যে পৌঁছেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজিও।

আলিগড়ের আইজি বলেন, ঘটনার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। যতদূর জানা গিয়েছে রতিভানপুরে ভগবান শিবের উদ্দেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তখনই পদপিষ্ট হয়ে এতো প্রাণহানি ঘটে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই রয়েছেন হাথরাস ও ইটাহর বাসিন্দা। মৃতদের আলিগড় ও ইটাহতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলেও সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ছিল না। চিকিৎসার গাফিলতিরও অভিযোগ তুলেছেন তারা। ঘটনার পর পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ও ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ও উত্তরপ্রদেশ সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply