কোটালীপাড়া হাসপাতালে নোটিশ: ‘এ ওয়ার্ডের ছাদ ভেঙ্গে পড়তেছে…’

|

স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ

‘এ ওয়ার্ডের ছাঁদ ভেঙ্গে পড়তেছে, এখানে থাকলে নিজ দায়িত্বে থাকবেন।’ কর্তৃপক্ষ এমন নোটিশ টাঙিয়েছে হাসপাতালে ভেতরে। এটা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিত্র।

হাসপাতাল ভবনের দ্বিতীয় তলায় মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডের প্রবেশমুখে এভাবে বেশ কিছু দিন ধরে এই নোটিশ ঝুলানো আছে। আর সেখানেই ‘নিজ দায়িত্বে’ ভর্তি আছেন রোগীরা! যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই তাদেরকে সেখানে থাকতে হচ্ছে। অথচ বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই।

জানা গেছে, ভবনটি বছর খানেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। ছাদ ভেঙে পড়ছে। ইতোপূর্বে ছাদের খসে পড়া পলেস্তরার আঘাতে একাধিক রোগী ও তাদের এ্যাটেনডেন্ট আহত হয়েছেন। তারপরও বাধ্য হয়েই পরিত্যক্ত এই হাসপাতাল ভবনে জীবন বাঁচাতে এসে মৃত্যু ঝুঁকিতে রোগী ও স্বজনদের থাকতে হচ্ছে।


শুধু ভবনের সংকটই নয়, আরও নানা সমস্যায় হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। গত ৭ মাস ধরে সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে এই হাসপাতালে।চিকিৎসকও নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক।

৪০ বছর আগে নির্মিত ৩১ শয্যার হাসপাতালটি কয়েক বছর আগে ৫০ শয্যায় উন্নীত করলেও নতুন কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। আগের ৩১ শয্যা হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারিরাই চালাচ্ছেন। ২২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৯ জন। ৭ মাস ধরে গাইনি ও অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ নেই।

হাসপাতালটির সিনিয়র স্টাফ নার্স জ্যাকলিন রুনু বৈদ্য বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় ছাদের পলেস্তারা খসে পায়ে পড়ে আহত হয়েছি। আমাদের বসার রুমের ছাদের অবস্থা ভালো নয়। ঝুঁকির মধ্যে দায়িত্ব পালন করে যেতে হচ্ছে। কখনো কখনো ছাদের পলেস্তরা খসে চিকিৎসক ও রোগীরা আহত হচ্ছেন।

কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রেমানন্দ মন্ডল সাংবাদিকদেরকে বলেন, প্রকৌশল বিভাগ অনেক আগেই এ ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। আমরা এখানে রোগী রাখতে চাই না। রোগীরা জোর করে এখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নেন। তাই আমরাও সতর্কতামূলক নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছি।

৭ মাস ধরে এই হাসপাতালে গাইনি ও অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ নেই একথা স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, এখানে চিকিৎসক সংকট প্রকট। তাই অপারেশন বন্ধ রয়েছে। চিকিৎসক সংকটের মধ্যেও প্রতিদিন ৩/৪ শ রোগীকে আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply