সুমাইয়া ঐশী:
জুলাই-আগস্ট রেখে গেছে কয়েক হাজার গল্প। দেশের ঘরে ঘরে তৈরি হয়েছে বীরত্বগাথা। বছর তো পেরুচ্ছে, কেমন আছে সেসব বীর সন্তানদের পরিবার? কীভাবে দিন কাটছে তাদের ভালোবাসার মানুষগুলোর?
১৭ জুলাই, ২০২৪। রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর আক্রোশে আন্দোলন তখন প্রায় স্তিমিত। ঠিক এসময় খবরের শিরোনামে উঠে আসে ‘যাত্রাবাড়ী’। এখানেই প্রথম ছাত্রদের পাশে রাস্তায় নেমে এসেছিলো সর্বস্তরের মানুষ। গড়ে তুলেছিলো চূড়ান্ত অবরোধ।
তরুণদের তাজা রক্তে যে নতুন সূর্য, তাদের স্মরণে যাত্রাবাড়ী মোড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ‘শহীদি স্মৃতি চত্বর’। সেখানে এ এলাকায় ৪৮ শহীদের মধ্যে জ্বলজ্বল করছে একটি নাম ‘দ্বীন ইসলাম’।
৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনেই খুব কাছ থেকে দ্বীন ইসলামকে গুলি করে পুলিশ। সন্তানের রক্তমাখা পোশাক আঁকড়ে থাকা মায়ের একটাই ইচ্ছা, মৃত্যুর আগে অন্তত একবার সন্তানের খুনির মুখোমুখি হওয়া।
শহীদ দ্বীন ইসলামের মা বলেছেন, আমার ছেলেকে যারা খুন করেছে তাদের বিচার যেনো দেখে যেতে পারি। যেন জানতে পারি কী অপরাধে তাকে মারা হয়েছে।
ওইদিন ছোট ভাইয়ের সামনেই প্রথম গুলিটা লাগে দ্বীন ইসলামের। চোখের সামনে বড় ভাইয়ের মৃত্যুর করুণ দৃশ্য সহ্য করতে পারেনি সামিউল। দিন দিন মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ছে সে। শেষ সম্বল এ সন্তানটিকে নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা-মা।
মায়ের বুক ফাঁটলেও কাঁদতে পারেন না বাবা। যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তায় তাই ছোট্ট দোকানটায় বসে স্মৃতি হাতড়ে বেড়ান শাহ আলম ব্যাপারী।
দেশ বাঁচাতে লড়তে চেয়েছিল দ্বীন ইসলাম। বলেছিল, যদি সুযোগ পাই, তবে দেশের জন্য শহীদ হবো। ছেলের শেষ নিঃশ্বাস পড়েছে যে মাটিতে, সেখানে কারণে-অকারণে এখন ঘুরে বেড়ান বাবা।
/এআই
Leave a reply