সংঘাত-সহিংসতায় উত্তাল তুরস্কের রাজপথ। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাজধানী আঙ্কারা, ইস্তাম্বুলসহ অনেক শহরে চলছে বিক্ষোভ। বিরোধী দল এবং সরকারের সমালোচকরা এই গ্রেফতারকে তুর্কি গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখছেন। রোববার (২৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়।
তুর্কি সরকার জানিয়েছে, এ পর্যন্ত তিন শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
ইস্তাম্বুলে সিটি হলের সামনে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জল কামান, টিয়ার শেল ছোড়ে পুলিশ। পরে বিক্ষোভকারীরাও পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
এদিকে, স্থানীয় সময় শনিবার (২২ মার্চ) দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ইমামোগলুকে। এ সময় আদালতের বাইরেও বিক্ষোভ করে তার সমর্থকরা।
গত বুধবার (১৯ মার্চ) স্থানীয় সময় সকালে, প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) সদস্য একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এই গ্রেফতারের পর থেকেই ইস্তাম্বুলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। হাজারো মানুষ পুলিশ সদর দফতরের কাছে জড়ো হয়ে মেয়রের সমর্থনে এবং সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে।
৫৪ বছর বয়সী ইমামোগলু গত কয়েক মাসে এরদোয়ান ও তার সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। যার ফলে তার বিরুদ্ধে একের পর এক আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বুধবার (১৯ মার্চ) গ্রেফতারের পূর্বে তিনি বলেন যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে হাল ছাড়বেন না এবং চাপের মুখে দাঁড়িয়ে থাকবেন।
ইমামোগলুর গ্রেফতার তুরস্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। বিরোধী দল এবং সরকারের সমালোচকরা এই ঘটনাকে গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হামলা হিসেবে দেখছেন। এই বিক্ষোভ তুরস্কের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সমালোচকরা যুক্তি দিচ্ছেন যে এই পদক্ষেপগুলি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত, যা আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিরোধী পক্ষের মতামত দমন এবং ক্ষমতা সংহত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইমামোগলু বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) একজন বিশিষ্ট নেতা। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের একজন কট্টর সমালোচকও তিনি। তার গ্রেফতারের বিরুদ্ধে বিরোধী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে তুরস্ক বর্তমান প্রশাসনের অধীনে একটি ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া আর সম্ভব নয়।
/এআই
Leave a reply