নিউজিল্যান্ডের একটি আদালতে ২০ বছর ধরে চলা অভিবাসন ও পরিচয় জালিয়াতির ৪০টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এক বাংলাদেশি দম্পতি। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী তাজ পারভিন শিল্পী পরিবারের এক সদস্যের পরিচয় ব্যবহার করে নিউজিল্যান্ডে প্রবেশ, কাজের সুযোগ এবং শেষ পর্যন্ত নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য জালিয়াতি করেছিলেন। নিউজিল্যান্ড ইমিগ্রেশনের ছয় বছরের তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়। এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনজি হেরাল্ড এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির অকল্যান্ড ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে ১৩ দিনের জুরি বিচারের পর গত শুক্রবার (২১ মার্চ) এই দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালতে শোনা যায়, জাহাঙ্গীর আলম তার ভাইয়ের পরিচয় ব্যবহার করে প্রথমে নিউজিল্যান্ডের ভিজিটর ভিসা পান। এরপর ওয়ার্ক পারমিট, রেসিডেন্স ভিসা এবং শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের নাগরিকত্ব ও দুটি পাসপোর্ট পান। এছাড়াও, তিনি এই জাল পরিচয় ব্যবহার করে তার স্ত্রী শিল্পী এবং মায়ের জন্য মোট ১৫টি অভিবাসন পারমিট ও ভিসার আবেদন জমা দিয়েছিলেন।
অভিযুক্ত দম্পতি জানতেন যে আলম তার আসল পরিচয় ব্যবহার করছেন না এবং নিউজিল্যান্ড ইমিগ্রেশনে জমা দেয়া অন্যান্য আবেদনগুলোতে ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন।
ইমিগ্রেশন কমপ্লায়েন্স ও তদন্তের জেনারেল ম্যানেজার স্টিভ ওয়াটসন বলেছেন, এই দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঘটনাটি একটি শক্তিশালী বার্তা দেয় যে ইমিগ্রেশন নিউজিল্যান্ডকে জাল তথ্য প্রদান করা আইনত অপরাধ।
ওয়াটসন আরও বলেন, ‘এই ধরনের অপরাধ অভিবাসন ব্যবস্থার মূলে আঘাত করে। আমরা আশা করি যে আবেদনকারীরা ভিসা পাওয়ার বা নিউজিল্যান্ডে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণের জন্য সৎ ও সম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করবেন। কেউ যদি ইমিগ্রেশন নিউজিল্যান্ডকে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে তাহলে তদন্ত করা হবে এবং তাদের কর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।’
ওয়াটসন আরও উল্লেখ করেন যে এই মাত্রার তদন্ত অত্যন্ত জটিল। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নিবেদিত তদন্ত দলকে নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত, যারা দিনরাত কাজ করে এই মামলাটি সম্পূর্ণরূপে তদন্ত করেছে এবং ছয় বছর পর শেষ পর্যন্ত এটিকে আদালতে উপস্থাপন করেছে। আমরা এই অপরাধটি চিহ্নিত করতে পেরেছি। সেই সাথে আরও অপরাধ সংঘটিত হওয়া রোধ করতে পেরেছি এবং শেষ পর্যন্ত আলম ও শিল্পীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি।
/এআই
Leave a reply