সংবাদ সংগ্রহের জের ধরে বুয়েটে তিন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাঞ্ছিত হওয়া সাংবাদিকরা হলেন- দৈনিক জনকণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার মুনতাসির জিহাদ, কালের কন্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী হাসান ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার কবির কানন। গতকাল রাতে এই ঘটনা ঘটে।
ভূক্তভোগী সাংবাদিকরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে আটকে রাখা হয়েছে শুনে তারা বুয়েটের শেরে বাংলা যায়। পরে হলে প্রবেশ করতে গেলে মূল ফটকটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। ভেতরে ঢুকতে চাইলে হলের দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী জানান, ছাত্রলীগের নিষেধ আছে। প্রহরীকে পরিচয় দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন তারা।
এরপর হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিকেদের মোবাইল ফোন, পত্রিকার পরিচয়পত্র ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয় এবং তাদেরকে জোরপূর্বক হলের ক্রীড়া কক্ষে নিয়ে যায়। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে কক্ষটিতে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানোর পর ঘটনাটি জানাজানি হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সাংবাদিক লাঞ্ছনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হলেন- উপ-দপ্তর সম্পাদক আসিফ রায়হান মিনার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এসএম মাহমুদ সেতু, যুগ্ম-সম্পাদক নাফিউল আলম ফুজি, প্রচার সম্পাদক নিলাদ্রি নিলয় দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ মাহমুদ অয়ন, সহ-সভাপতি সন্টুর রহমান প্রমূখ। এরা সবাই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। এদের সাথে আরও ছিলেন- মেকানিকাল বিভাগের অর্ণব চক্রবর্তী সৌমিক, সিভিল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের রাউফুন রাজন ঝলক, মেকানিকাল বিভাগের মিনহাজুল ইসলাম, নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগের নিলাদ্রী নিলয় দাস, নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগের মেহেদী হাসান, তড়িত কৌশল ফারহান জাওয়াদ।
মারধরের বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মেহেদী হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ধরে নিয়ে গেছে এমন তথ্য পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। কারণ ঘটনাটির বিষয়ে একেকজন একেক রকম তথ্য দিচ্ছিল। হলের ভেতর প্রবেশ করার পরে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে মারধর করে।
এই ঘটনার জন্য রাত বারোটার দিকে বুয়েট ছাত্রলীগের সভপতি খন্দকার জামী-উস সানী ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এসে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেও তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না বলে জানান।
এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বুয়েটের শেরে বাংলা হল প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
Leave a reply