বৈশাখের বর্ণিল রঙে মেতেছে গোটা দেশ

|

নতুন আশা-নতুন উদ্দীপনায় বরণ করা হচ্ছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে। দেশজুড়েই উচ্ছ্বাস-আনন্দে মাতোয়ারা সবাই। হয়েছে বর্ণিল শোভাযাত্রাসহ সাংস্কৃতিক নানা আয়োজন। সবাই মিলে ঐকতানে বরণ করা হচ্ছে পহেলা বৈশাখকে।

বর্ণিল পোশাক, বাহারি পশু-পাখির মুখোশ-ফেস্টুন আর বর্ণাঢ্য এই শোভাযাত্রার আয়োজন বাংলা নতুন বছরকে বরণে। সাথে সকল অশুভ শক্তি-জরা মুছে প্রকৃতিতে নতুনত্বের এক উদার আহ্বান তো বটেই।

পহেলা বৈশাখের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ শোভাযাত্রা। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে যার প্রথম পদচলা। সেই প্রতিবাদের শক্তি জোগাতে বাঙালি সেদিনে ফিরে তাকিয়েছিলে তার হাজার বছরের কৃস্টি কালচারের দিকে। তাই তো, শোভাযাত্রায় শোভা পায় গ্রামীণ সব সংস্কৃতি। যেখানে জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে থাকে প্যাচা, সমৃদ্ধি ও নদী মাতৃক যাপিত জীবন ধরে তুলে ইলিশ আর শক্তি ও প্রতিবাদের ধারক হিসেবে থাকে বাঘ।

তাই চট্টগ্রামের ডিসি পার্কে বর্ষবরণের আগের দিন ভাঙচুর চালিয়েও থামানো যায়নি আনন্দ উদযাপন। নগরীর বিভিন্ন মোড় থেকে ঠিক সকল বয়সী মানুষ যোগ দেয় আনন্দ যাত্রায়।

মুন্সিগঞ্জে নানা আয়োজনে আর উৎসব আয়োজনে চলছে বাংলা বর্ষবরণ। সকালে কালেক্টর মাঠ থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। এতে অংশনেয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশাসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ। শোভাযাত্রাটি শহরের সুপারমার্কেট শহীদ চত্ত্বর সহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রা আবহমান বাংলার বিভিন্ন উপাদান উপকরণ ও সাজসজ্জায় ফুটে উঠে। ডাক ঢোলের গানে আর বৈশাখের স্লোগানে মেতে উঠে সকলে।

সিলেটে সমবেত কন্ঠে বৈশাখের আগমনী গান আর প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে বরণ করা হয় বাংলা নতুন বছরকে। ঐতিহাসিক সারদা হল প্রাঙ্গণে শ্রুতি সিলেটের আয়োজনে এ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেয় সিলেটের ২০টি সাংস্কৃতিক সংগঠন। 

এদিকে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে খুলনার মানুষ বরণ করে নিচ্ছে নতুন বছরকে। দিনটি উপলক্ষে সকাল থেকেই নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সকাল সাড়ে ছয়টায় নগরীর বড় মাঠের টেনিস গ্রাউন্ডে এসো হে বৈশাখ এসো এসো গানের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করে উদীচী খুলনা। এছাড়া জেলা প্রশাসন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক ,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

পাহাড় থেকে সমুদ্র, দেশজুড়ে দিনটি এভাবেই কাটে সকলের। পান্তা ইলিশ খেয়ে মেলায় ঘুরাঘুরি আর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজনে।

তবে শুধু উৎসব উদ্দীপনায় সীমাবদ্ধ নয়, হালখাতা খুলে বেপারি-বণিকরাও পুরনো হিসেব চুকিয়ে নতুন লেনদেনের সুবাতাস লাগায় কারবারে।

পহেলা বৈশাখের যাত্রা শুরু ফসলি সন হিসেবে। অর্থাৎ এই উৎসব অন্যদের চেয়ে কৃষকদের বেশি। তাই, ধর্ম বর্ণের বিভেদ ঘুচিয়ে, এই উৎসব একইসাথে শ্রেণিহীন সমাজের ডাকও দেয়। হয়ে যায় জাতিগত ঐক্যের প্রতীক।

/এটিএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply