চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে এমন কথাই বলে আসছেন প্রধান উপদেষ্টা ও তার দফতর। তবে এ রকম সময়সীমায় পুরোপুরি আশ্বস্ত নয় বিএনপি। তাই সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আগামীকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল) বৈঠক করবে দলটি।
দলটির নেতারা বলছেন, বুধবারের (১৬ এপ্রিল) বৈঠকে আশ্বস্ত হলে ভোটের লড়াইয়ের কৌশল ঠিক করবে দলটি। আর ফলাফল অন্যরকম হলে রোডম্যাপ চেয়ে কর্মসূচিতেও যেতে পারে বিএনপি। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দুপুর ১২টায় বৈঠকটি হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গোষ্ঠী আবদার করছেন, তারা পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলম-ও সম্প্রতি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান।

তারপরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী-ও কথাচ্ছলে বলেছেন, জনগণ চায় এ সরকার ৫ বছর থাকুক। বিষয়গুলো আরও অস্বস্তি তৈরি করেছে বিএনপি শিবিরে। যা সরকারের প্রেস নোটেও কাটেনি।

পরিস্থিতি যখন এই, তখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ভোটের সুনির্দিষ্ট সময় ইস্যুতে তারা জানতে চাইবেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে। হতাশা-অবিশ্বাস দূর করতে বুধবারই বসছেন তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে বুঝাতে চেষ্টা করবো। কারণ— তার প্রতিশ্রুতি মতো আগামী ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন দেয়ার জন্য বিএনপি ও জাতিকে যে আশ্বাস তিনি দিয়েছিলেন, সেই কথাগুলো তিনি যেন যথাযথ প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ঘোষণা দেন। এছাড়াও নির্বাচন কমিশনকে তিনি যেন আদেশ দেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করার জন্য।
দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, যারা ড. ইউনূসকে ৫ বছর রাখার চেষ্টা করছে, তারাই তাকে প্রিয় জায়গা থেকে নামিয়ে দেবে এবং তার সব অর্জন নষ্ট করে দেবে। পাশাপাশি দেশটাও শেষ করে দেবে। কারণ— একটা সরকার নির্বাচন ছাড়া থাকতে পারে না। যদি থাকতেই হয়, তাহলে যথাযথ নির্বাচনের মাধ্যমে সেটি হতে হবে।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, শেখ হাসিনার পতনের পর খুলে গেছে সংস্কারের পথ। কিন্তু এই সংস্কারের কথা বলে ড. ইউনূসকে ভুলপথে নেয়ার চেষ্টা করছে কোনো কোনো দল। যাদের জনসমর্থন দুর্বল। খোলাখুলি কথা বলেই নিজেদের দলীয় কৌশলে যেতে চায় বিএনপি।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এক থেকে দেড় বছর আগেই বিএনপি ৩১ দফা জাতির সামনে উত্থাপন করেছিল। জাতির কাছে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু সংস্কারের নামে কারও এজেন্ডা বাস্তবায়ন হতে দিতে চাই না।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, হয়তো ড. ইউনূস নির্বাচন দেয়ার জন্য যথেষ্ট সচেষ্ট আছেন। কিন্তু উনার আশেপাশে আওয়ামী বাহিনী এখনও লুকায়িত আছে। তারা প্রধান উপদেষ্টাকে অন্য পথে পরিচালিত করতে পারেন। এ রকম সম্ভাবনা থেকেই ড. ইউনূসের সাথে কথা বলতে চায় বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বেই বৈঠকে যোগ দেবে বিএনপির প্রতিনিধি দল। এরপর কি নির্বাচনের প্রস্তুতি, নাকি ভোটের জন্য কর্মসূচি? নির্ভর করছে বৈঠকটির ওপর।
/এআই/এমএন
Leave a reply