ঢাকায় প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ফায়ার স্টেশন, ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে লাগছে বাড়তি সময়

|

প্রতীকী ছবি

ভাস্কর ভাদুড়ী:

হঠাৎ আগুন বা লঞ্চডুবিসহ যেকোনও দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সবার আগে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নিস্বার্থ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে নগরবাসীর মুখে এই বাহিনীর নামই সবার আগে আসে।

প্রতিনিয়তই ঢাকার জনসংখ্যা বাড়ছে। ফলে যানজট বাড়ছে, রাস্তা কমছে। এতে বিপদ-আপদের শঙ্কা। এত মানুষের শহরে সীমিত সম্পদ ও জনবল নিয়ে কাজ করতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা হিমশিম খাচ্ছে। চেষ্টা করেও দ্রুততম সময়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারছেন না তারা।

রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত পান্থপথ, বাংলামোটর, মগবাজার, রামপুরা, কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, কমলাপুর, যাত্রাবাড়ী, শান্তিনগর, ধানমন্ডি, আগারগাঁও, আদাবর ও শ্যামলী এলাকায় কোনও ফায়ার স্টেশন নেই। অর্থনীতির প্রাণ বলে খ্যাত বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল ও কূটনীতি পাড়া হিসেবে পরিচিত গুলশান ও বনানীর বাসিন্দারাও ফায়ার স্টেশন থেকে বঞ্চিত।

২০১৯ সালে বনানীর এফ আর টাওয়ারে লাগা আগুনে ২০ জন প্রাণ হারান। আহত হন ৭০ জনের বেশি। এ ঘটনার পর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান ও বনানীতে ফায়ার স্টেশন স্থাপনে উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে জমি না পাওয়ায় গত ৬ বছরেও এই উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। নীতিনির্ধারকরা বলছেন, সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে নতুন স্টেশন স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না।

ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, সকল অংশীদারদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে করনীয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সকল দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস প্রথম সাড়া দিচ্ছে। তবে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে হলে সবার সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন।

এদিকে, প্রতিনিয়ত বিপদের ঝুঁকি বাড়ছে। যেমন মতিঝিলে যদি আগুন লাগে, তা নেভাতে বকশিবাজার থেকে দমকলের গাড়ি আনতে হয়। যার দূরত্ব তিন কিলোমিটার। আবার যাত্রাবাড়িতে আগুন লাগলে তা নেভাতে সাত কিলোমিটার দূরে থাকা পোস্তগোলা ইউনিটের কাজ করতে হয়।

এসব সীমাবদ্ধতা মাথায় রেখে ফায়ার সার্ভিসকে উন্নত করার চেষ্টার কথা জানান বাহিনীটির প্রধান। মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, আমাদের জায়গা থেকে বিষয়টির সমাধান করা খুবই কঠিন। ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা জায়গার ব্যবস্থা করলে নতুন স্টেশন স্থাপন সম্ভব হবে। ফলে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়বে। পাশাপাশি এখনেই চেয়ে দ্রুত সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো যাবে।

প্রতিনিয়ত বিপদের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি পাল্টাচ্ছে দুর্ঘটনার ধরণ। সড়ক দুর্ঘটনা, পশু পাখি উদ্ধার বা ঘরের দরজা ভাঙার কাজও ফায়ার সার্ভিসকে করতে হচ্ছে। সেজন্য ঢাকায় নতুন অন্তত পাঁচটি স্টেশন জরুরি বলে মনে করছে ফায়ার সার্ভিস।

/আরএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply