ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি— শব্দটি আধুনিক অর্থনীতির নিরিখে বেশ পরিচিত। বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য আরও শক্তিশালী শাসন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। এর পাশাপাশি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন।
দু’দিনব্যাপী (১৩-১৪ মে) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতি: নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থায় টেকসই অর্থনীতির জন্য বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক দুইদিনব্যাপী একটি ওয়েবিনারে তারা এসব কথা বলেন।
এটির আক্ষরিক অর্থ সমুদ্রের বিশাল জলরাশি ও এর তলদেশের বিভিন্ন প্রকার সম্পদকে কাজে লাগানোর অর্থনীতি। অর্থাৎ, সমুদ্র থেকে আহরণকৃত যে কোন সম্পদ দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়, তাই ব্লু -ইকোনমির বা সুনীল অর্থনীতির পর্যায়ে পড়বে।
প্রথম দিনের আলোচনায় বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগের সুযোগ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। দ্বিতীয় দিনটি ছিল সুনীল অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত মূল অংশীজন, প্রভাবক এবং সমুদ্রের স্বাস্থ্য ও টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব নিয়ে বিশ্লেষণমূলক আলোচনা। আলোচনার একটি প্রধান বার্তা ছিল— বাংলাদেশে সুনীল অর্থনীতি সম্পর্কিত কার্যক্রমগুলোর সমন্বয় সাধনের জন্য একটি একক জাতীয় কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রয়োজনীয়তা।
ওয়েবিনারটিতে বিশেষজ্ঞরা একটি জাতীয় সমন্বয় কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব দেন, যা দেশের নীল ও সমুদ্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি ‘ওয়ান-স্টপ-সেন্টার’ হিসেবে কাজ করবে।
ওয়েবিনারটির আয়োজন করেছে সিমেক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার এবং অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সানশাইন কোস্টের দ্য সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনেউরশিপ (সিডসেল)।
এটি মূলত আয়োজিত হয় অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের বাংলাদেশে সুনীল অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণা ও নীতিমালা উন্নয়ন নামক পোস্ট-কোর্স কার্যক্রম হিসেবে। যার লক্ষ্য বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতি খাতে গবেষণা ও নীতিমালার উন্নয়ন। প্রোগ্রামটি অর্থায়ন করছে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিভাগ।
ওয়েবিনারটিতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, গবেষক, শিক্ষাবিদ, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুনীল অর্থনীতি বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সচিব ড. সানওয়ার জাহান ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস.এম. শামীম রেজা, সিমেক গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ফোয়ারা ইয়াসমিন, সিমেক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির পরিচালক ড. রতন কুমার রায়সহ অন্যান্যরা।
অস্ট্রেলিয়ার সিডসেলের তামি হ্যারিয়ট এবং অনুপম এজাজ ওয়েবিনারটির সহ-আয়োজক হিসেবে আলোচনা পর্বে অংশ নেন। এটি সঞ্চালনা করেন সিমেক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়কারী ড. শরিফুল ইসলাম এবং সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শরীফুল ইসলাম ।
/এমএইচআর
Leave a reply