ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো থেকে খুব বেশি দূরে নয় পারস্য উপসাগরীয় (গালফ স্টেটস) দেশগুলো। অঞ্চলজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সামরিক ঘাঁটি থাকায় সংঘাত বিস্তারের আশঙ্কায় দেশগুলো।
যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর রোববার (২২ জুন) অঞ্চলজুড়ে সংঘাত বিস্তারের আশঙ্কায় চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে উপসাগরীয় দেশগুলো। এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, মার্কিন বাহিনী ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস’ করেছে। তিনি তেহরানকে সতর্ক করে বলেন– যদি তারা শান্তিতে সম্মত না হয়, তবে আরও ভয়াবহ হামলার সম্মুখীন হতে হবে।
ইরানে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় শনিবার রাতে হোয়াইট হাউজ থেকে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে মার্কিন হামলার পর রোববার (২২ জুন) চূড়ান্ত নিরাপত্তা সতর্কতায় ছিল বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব।
এদিকে, নিজেদের ড্রাইভারদের প্রধান সড়কগুলো এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে বাহরাইন সরকার। কুয়েত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ভবনে আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
তেহরান এর আগে বহুবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল– যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর হামলা চালায়, তবে তারা এই অঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন সম্পদগুলোকে (যার মধ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে) লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে।
উল্লেখ্য, বাহরাইনে মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম বহরের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। আর সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।
সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পারমাণবিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর তারা কোনো ধরনের পারমাণবিক দূষণের লক্ষণ শনাক্ত করেনি।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে বাহরাইনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আমরা নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি– জননিরাপত্তা বজায় রাখুন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন সড়কগুলো কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে, সে জন্য প্রয়োজন ছাড়া প্রধান সড়কগুলো ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
চলমান উত্তেজনার কারণে বাহরাইনের সিভিল সার্ভিস ব্যুরোর মতে, রোববার ৭০% সরকারি কর্মচারীকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বাসা থেকে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বাহরাইন ৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছে।
আন্তর্জাতিক কৌশল ও নীতিনির্ধারণী প্রতিষ্ঠানের (আইআইএসএস) মধ্যপ্রাচ্য নীতি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ ফেলো হাসান আল-হাসান সতর্ক করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সরাসরি সংঘাত উপসাগরীয় অঞ্চল– বিশেষ করে বাহরাইন, কুয়েত ও কাতারকে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে জড়িয়ে ফেলার ঝুঁকিতে নিয়ে গেছে।
/এএম
Leave a reply