নবাবগঞ্জে সাংবাদিকদের উপর হামলা: সিলেটে নিন্দার ঝড়

|

সিলেট ব্যুরো

ঢাকার নবাবগঞ্জে নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় সিলেট জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি পেশাজীবি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এর তীব্র নিন্দা এবং দায়ীদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

দায়ীদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় না আনলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও তারা মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকারও তারা কঠোর সমালোচনা করেছেন। দেশের বহুল প্রচারিত দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের ওপর সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সিলেট জেলা প্রেসক্লাব ও সিলেট প্রেসক্লাব।

সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবীর, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তাপস দাস পুরকায়স্থ, সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম চৌধুরী নবেল বুধবার পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এ ঘটনাকে অত্যন্ত ন্যক্কারজনক উল্লেখ করেছেন। এর সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের হামলা সাংবাদিক সমাজকে আতঙ্কিত করেছে। সাংবাদিকরা দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে থাকেন। কিন্তু বিভিন্ন সময় তাদের নানাভাবে হয়রানি-নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়। যেটা পেশাদার সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ। এর অবসান হওয়া জরুরি এবং এক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত।

তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকবান্ধব একজন নেতা। তাকে বিব্রত ও বিতর্কিত করার জন্য কোনো মহল এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, সেটিও পর্যালোচনা করা দরকার।

ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন (ইমজা) সিলেটের পক্ষ থেকে সভাপতি আশরাফুল কবীর ও সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দেবু বুধবার এক বিবৃতিতে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, সংবাদকর্মীদের ওপর এ ধরনের হামলা ন্যক্কারজনক এবং মুক্ত ও স্বাধীন সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতার শামিল। বিশেষ করে নির্বাচনের সময় দেশজুড়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখে সাংবাদিক সমাজ খুবই ক্ষুব্ধ। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে এখনই। অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ লালা ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস। তারা বলেন, নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করার সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা, মারধর ও গাড়ি ভাংচুর সম্পূর্ণ অন্যায় ও স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য বাধা। এ ধরনের ঘটনা ন্যক্কারজনক। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান তারা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী এক বিবৃতি জানান, দেশে সামান্যতম সুশাসন থাকলে গণমাধ্যমকর্মীদের উপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটতো না। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সাংবাদিকরা জাতির দর্পণ। তাদের উপর যদি স্বাধীন দেশে বর্বরোচিত হামলা করা হয়। তাহলে দেশের সাধারণ মানুষের কী অবস্থা আর বলা অপেক্ষা রাখে না উল্লেখ করে গণমাধ্যমকর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদ।

পৃথক বিবৃতিতে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি শামছুল আলম সেলিম, সম্মিলিত নাট্যপরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমেদ মিশু ও সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত বলেন, পেশাদার সাংবাদিকদের লাঞ্ছিতের ঘটনা উদ্বেগের বিষয়, যা আমাদের কাম্য নয়। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি পাশাপাশি দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply