দোহার-নবাবগঞ্জ হবে দেশের শ্রেষ্ঠ এলাকা: শিল্পপতি নুরুল ইসলাম

|

দোহার-নবাবগঞ্জকে আধুনিক ও দেশের শ্রেষ্ঠ এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, দু’বারের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে মটরগাড়ি মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করলে দোহার-নবাবগঞ্জকে দেশের শ্রেষ্ঠ আধুনিক ও মডেল এলাকা হিসেবে গড়ে তুলব।

একই সঙ্গে চুড়াইনসহ দোহার-নবাবগঞ্জের ইউনিয়নগুলোকে মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করব। ঢাকা-১ আসনের নবাবগঞ্জ উপজেলার চুড়াইন ইউনিয়নের তারিণী বামা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৃহস্পতিবার বিকালে মটরগাড়ি প্রতীকের নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব প্রতিশ্রুতি দেন শিল্পপতি নুরুল ইসলাম।
জনসভা উপলক্ষে তারিণী বামা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে দুপুরের পর থেকেই জনতার ঢল নামে। ঢাকঢোল বাজিয়ে মটরগাড়ি প্রতীক আর ফেস্টুনে ফেস্টুনে ভরে যায় গোটা এলাকা। আসতে থাকে একের পর এক মিছিল। বিকালের আগেই হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে স্কুল মাঠটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। উপস্থিত জনতা স্লোগান দিতে থাকে, উন্নয়নের মার্কা কি? মটরগাড়ি, মটরগাড়ি। সালমা ইসলামের মার্কা কী? মটরগাড়ি, মটরগাড়ি। মুখরিত হয়ে ওঠে স্কুল মাঠসহ আশপাশের এলাকা।

জনসভায় প্রধান অতিথি শিল্পপতি ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, আমি আপনাদের ভাই, আপনাদেরই সন্তান। আমার স্ত্রী দু’বারের সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে আপনারা বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করেছিলেন। ওই নির্বাচনে চুড়াইন ইউনিয়নের মানুষ তাকে সর্বোচ্চ ভোট প্রদান করেছিল। আপনারা তাকে বিশ্বাস করেন, পছন্দ করেন বলেই বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছেন এবং তিনি আপনাদের জন্য ব্যাপক কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। এ জন্য আমি আপনাদের কাছে চিরঋণী ও কৃতজ্ঞ। আমি আনন্দিত, আমি গর্বিত।

নুরুল ইসলাম বলেন, সালমা ইসলামকে নির্বাচিত করে আপনারা যে আমাকে সম্মান দিয়েছেন আমি তা রাখার চেষ্টা করেছি। গত পাঁচ বছরে সালমা ইসলাম এমপি শুধু চুড়াইন ইউনিয়নে ২১ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। নবাবগঞ্জ-দোহারে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো এমপি-মন্ত্রী এককভাবে এত কাজ করতে পারেনি। সালমা ইসলামকে ভোট দিলে সুন্দর রাস্তাঘাট পাবেন, সবাই ভালো অবস্থানে থাকবেন, মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ হবে। ভালো স্কুল-কলেজ পাবেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে, সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা পাবেন, সবাই শান্তিতে থাকবেন।

৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে মটরগাড়ি মার্কায় ভোট দিয়ে সালমা ইসলামকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সালমা ইসলাম আবার সংসদ সদস্য হতে পারলে নবাবগঞ্জের ১৪টি ইউনিয়ন এবং দোহারের ৯টি ইউনিয়নকে মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করবেন। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ- এসব ইউনিয়ন অত্যাধুনিকভাবে সাজিয়ে তুলব। সারা দেশের মানুষ এ আসনের ইউনিয়নগুলোকে উন্নয়নের রেফারেন্স হিসেবে বিবেচনা করবে। মানুষ জানবে, এ উন্নয়নের রূপকার আপনাদের প্রিয় নেতা অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি।

শিল্পপতি নুরুল ইসলাম বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। অন্যকে ভোট দিতে উৎসাহিত করবেন। কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। মটরগাড়ির বিজয় ছিনিয়ে আনবেন। আমি কখনও বলব না, সালমা ইসলামের জন্য অন্যায়ভাবে ভোট দিন। তবে অনুরোধ করব, কেউ যদি বল প্রয়োগ করে ভোট দিতে চায় তা সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবেন। ভোট দেয়ার পর কেন্দ্র ছেড়ে চলে যাবেন না। আশপাশেই অবস্থান করবেন। ফলাফল ঘোষণা না করা পর্যন্ত কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করবেন। ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করছে। তারা কারও কাছে ভোট চায় না। তারা নিজেরা সিল মেরে ভোটবাক্স ছিনিয়ে নিতে চায়।

নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে নুরুল ইসলাম বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট করবে। কাউকে ভোট দিতে বাধা দেবে না। কিন্তু ভোট গণনার সময় ব্যাপক কারচুপি করবে। ১০০টি করে বান্ডিল করবে। বান্ডিলের নিচে-ওপরে ৫-১০টি করে নৌকার ব্যালট পেপার দেবে। ভেতরে সব মটরগাড়ির ব্যালট থাকবে। পরে বলবে গোটা বান্ডিলই নৌকা মার্কার। ৩০ ভাগ ভোটকে তারা ৭০ ভাগ ও ৭০ ভাগ ভোটকে তারা ৩০ ভাগ হিসেবে দেখাতে চায়। আপনারা সচেতন থাকলে এ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে পারবে না। কোনো কেন্দ্রে ভোট কারচুপির সংবাদ পেলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানাবেন। মুহূর্তের মধ্যেই আমি নিজে ওইসব কেন্দ্রে হাজির হব। ঢাকা-১ আসনে কোনো কারচুপি বরদাশত করা হবে না।

যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সারা বিশ্বকে দেখাতে চাই যে, এখানে কত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। সব ধরনের প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থেকে এখানে একটি সুন্দর নির্বাচন করতে চাই। ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সকালবেলা ভোট দিয়ে দুপুরের খাওয়া শেষে আবারও ভোট কেন্দ্রে যাবেন। ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত কেন্দ্র পাহারা দেবেন। দুষ্ট প্রকৃতির লোক আছে, তবে তাদের সংখ্যা খুব কম। সবাই মিলে তাদের প্রতিহত করতে হবে।

সালমা ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রসঙ্গে নুরুল ইসলাম বলেন, নৌকার প্রার্থী এমপি হলে জনগণের কী উপকার হবে? তাকে কী আপনারা কখনও দোহার-নবাবগঞ্জে দেখেছেন? তিনি এমপি হলে তাকে আগামী ৫ বছর এলাকায় একদিনের জন্যও দেখতে পাবেন না। কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে ৬ মাসেও সাক্ষাৎ পান না। তিনি এলাকার কারও সঙ্গে কথা বলেন না। কারও সঙ্গে হাত মেলান না, ভোটও চান না। কারণ তার পরিকল্পনা অবৈধপন্থায় সিল মেরে জয়ী হওয়া। তার এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেবে না দোহার-নবাবগঞ্জবাসী।

জনসভার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদিউজ্জামান বদি তার বক্তব্যে বলেন, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম আমাদের নয়নের মণি। উন্নয়নের নেত্রী। সৎ ও যোগ্যবান নেত্রী। কোনো দুর্নীতি-অনিয়মে তিনি নেই। আল্লাহ তাকে অঢেল ধনসম্পদ দিয়েছেন, তিনি মানুষকে দিতে জানেন। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দুর্নীতি-অনিয়ম করে পকেট ভারি করতে জানেন। আপনারা জানেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কোথায় ছিলেন।

তিনি ওই সময় পাকিস্তান ছিলেন। পাকিস্তানি মেয়ে বিয়ে করে সেখানে আমোদফুর্তি করতেন। তিনি এ পর্যন্ত কোনো মুক্তিযোদ্ধার মাথায় হাত রাখেননি, তাদের সহযোগিতা করেননি। তিনি শেয়ারবাজারকে চিরতরে ধ্বংস করে দিয়েছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। হাজার হাজার মানুষকে রাস্তায় বসিয়েছেন। যারা দেশকে ভালোবাসেন, দোহার-নবাবগঞ্জ মাটিকে ভালোবাসেন তারা কখনও তাকে ভোট দিতে পারেন না। আলহাজ মো. সোহরাব উদ্দিনের পরিচালনায় জনসভায় বদিউজ্জামান বদি বলেন, আমাদের পরীক্ষিত নেত্রী সালমা ইসলাম।

সালমা ইসলাম মানেই দেশের উন্নয়ন, সালমা ইসলাম মানেই দোহার-নবাবগঞ্জের উন্নয়ন। এ আসনের মানুষ বলছে, আমরা আবারও সালমা ইসলামকে জয়যুক্ত করব। এ আসনে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন করেছে সালমা ইসলাম। নদীভাঙনের শিকার মানুষকে ব্যক্তি পর্যায়েও লাখ লাখ টাকা দিয়েছেন সালমা ইসলাম এমপি। তাদের বাড়িঘর তৈরি করে দেয়ার জন্য তিনি ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছেন। শিক্ষার উন্নয়নে তিনি সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছেন। দোহার-নবাবগঞ্জে দুটি কলেজকে সরকারি করেছেন। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দিরসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করেছেন তিনি। সালমা ইসলাম এলাকায় থাকেন, আপনার সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply