অনুমোদন পেল আরও তিন ব্যাংক

|

বেসরকারি খাতে আরও তিনটি নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

রোববার বিকালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যাংকগুলো হচ্ছে বাংলা ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক এবং পিপলস ব্যাংক।

একই সঙ্গে এসব ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৪০০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৫০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এসব ব্যাংকের নামে ব্যাংক ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সম্মতিপত্র বা লেটার অব ইনট্যান্ট ইস্যু করা হবে। এর ভিত্তিতে উদ্যোক্তারা মূলধন জোগানসহ অন্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলে এদের নামে লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও এতে উপস্থিত ছিলেন। বিকাল ৪টায় শুরু হয়ে এ সভা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর এক পর্ষদ সভায় পুলিশ ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। রোববারের সিদ্ধান্তের ফলে বেসরকারি খাতের চারটি ব্যাংকেরই অনুমোদন দেয়া হল।

সূত্র জানায়, বাংলা ব্যাংকের মালিকানায় রয়েছে বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। গ্রুপের চেয়ারম্যান হচ্ছেন আওয়ামী লীগ এমপি মোরশেদ আলম। একই গ্র“পের ভাইস চেয়ারম্যান হচ্ছেন জসিম উদ্দিন। তিনি বাংলা ব্যাংকের পর্ষদের চেয়ারম্যান।

পিপলস ব্যাংকের পর্ষদের চেয়ারম্যান হচ্ছেন আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতা এমএ কাসেম এবং সিটিজেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান হচ্ছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মা জাহানারা হক।

সূত্র জানায়, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক তিনজনের বিষয়ে উচ্চ আদালতে কর সংক্রান্ত মামলা চলছিল। সেগুলো নিষ্পত্তি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানানোর পর পর্ষদ সেটির অনুমোদন দেয়।

পিপলস ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এমএ কাশেম। এ ব্যাংকের উদ্যোক্তা এমএ কাশেমের বিদেশে কি পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর ফলে পর্ষদ এর অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিটিজেন ব্যাংকের প্রস্তাবে কিছু ঘাটতি ছিল। সেগুলো ঠিকঠাক করে উপস্থাপন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। সেগুলো ঠিক করে আবার উপস্থাপন করায় এবার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এর আগে এ তিনটি ব্যাংকই বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদে উঠেছিল। কিন্তু তাদের ওই সব ঘাটতি থাকায় অনুমোদন দেয়া হয়নি। এগুলো ঠিক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দেয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেগুলো পর্যালোচনা করে অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

টানা দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম মেয়াদে নয়টি নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়। বর্তমানে দেশে ব্যাংকের সংখ্যা ৫৮টি। এর মধ্যে ৪০টি বেসরকারি খাতের, ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও ৯টি বিদেশি ব্যাংক রয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে এসব ব্যাংক লাইসেন্স চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করে। সেগুলো দীর্ঘ সময় পর্যালোচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন সন্তুষ্ট হয়েছে বলে এগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে ব্যাংক ব্যবসার মূলধনের পরিমাণ ৪০০ কোটি টাকা। নতুন এ তিনটি ব্যাংকের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০০ কোটি টাকা করা হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply