গাসিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

|

মো. পলাশ প্রধান, গাজীপুর:

গাজিপুর সিটি কর্পোরেশনের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

একাধিক চেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাত ও বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয় ধামাচাপারও অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে গত ০৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিও) কেএম রাহাতুল ইসলামকে একটি চিঠি দিয়েছে দুদক।

ওই চিঠিতে ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় দুদকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু ওই তারিখ চলে গেলেও বিশ্ব ইজতেমার কথা বলে রবিবার পর্যন্ত কাগজপত্র জমা না দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন মহলে চেষ্টা তদবির চালাচ্ছে নজরুল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আমারা চাকরি করি, চাকরি করতে গিয়ে অনেক সময় অনেক কিছু করতে হয়। সব কথা মোবাইলে বলা যায় না। আমি টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার ডিউটি করছি। টঙ্গীতে আসেন ভাই হিসেবে একটু বসে কথা বলি। বিপদ আপদে কি আপনার টু সহযোগী পেতে পারি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিও) কেএম রাহাতুল ইসলাম জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-ঢাকা এর সহকারী পরিচালক মো. মনিরুল ইসলামের সাক্ষরিত একটি চিঠি আমি পেয়েছি। ওই চিঠিতে রেকর্ডপত্র/কাগজপত্রাদির মূলকপি সংরক্ষনপূর্বক সত্যায়িত ছায়াকপি সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ব ইজতেমার ব্যস্ততার জন্য এখনো দিতে পারিনি।

তিনি আরো বলেন, আমিতো সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নই। সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসেবে ওইসব অভিযোগ সংক্রান্ত ফাইলগুলো মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জমা আছে।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সিটি কর্পোরেশনের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের চেক জালিয়াতি ও দুর্নীতি সংক্রান্ত ফাইলগুলো আমার কাছে জমা আছে। আমি ফাইলগুলো যাচাই বাচাই করে দেখছি। যাতে দুর্নীতিবাজরা কোন ভাবে পারপেয়ে না যায়। আমি চাই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঠিক বিচার হউক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাসিকের একাধিক সূত্র জানা যায়, নজরুল ইসলাম কতিপয় কর্তাব্যক্তির যোগসাজশে ভুয়া বিল, বাউচার ও নোটসীট তৈরি করে। পরে তৎকালীন মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানের অসুস্থতার সুযোগে মেয়রের ফ্ল্যাক্সো সীল ব্যবহার করে সিটি কর্পোরেশনের কোটি কোটি টাকার চেক নজরুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত একাউন্ট ‘ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), টঙ্গী শাখা, হিসাব নং:০৭০৩২০১০০০০৭৭৭০৪-এ জমা করে। ওই একাউন্টে ১৮-১০-২০১৮ইং তারিখ পর্যন্ত নজরুল ইসলামের নামে জমা থাকা টাকার পরিমাণ ৩ কোটি ৪০লাখ ৮৭হাজার ৫৮৮.৬৪ টাকা।

গুঞ্জন রয়েছে ওই হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার রাজধানীর রমনা থানা এলাকার সিদ্ধেশ্বরী এইচ-৬৩/৩ একটি ফ্ল্যাট, ফকিরাপুল এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট বাড়ি ও বিলাস বহুল দুটি গাড়ি রয়েছে। দুর্নীতির টাকা দিয়ে তিনি গুড়ে বেড়ান বিভিন্ন দেশ-বিদেশে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply