বিএনপি নেতা শাহীন হত্যা: যুবদল কর্মী পায়েলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

|

বগুড়া ব্যুরো:

জেলা মোটর মালিক গ্রুপের দ্বন্দ্বেই খুন হয়েছেন বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন। বৃহস্পতিবার এই মামলায় গ্রেফতার যুবদল কর্মী পায়েল শেখ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সদর আমলী আদালতের বিচারকের কাছে এই তথ্য জানান। হত্যাকাণ্ডের আগে কোথায় বৈঠক হয়েছে, কারা শাহীনকে বাসা থেকে উপশহর বাজার পর্যন্ত অনসুরণ করেছেন এবং কিলিং মিশনে কারা ছিলেন, এই সব তথ্যই জানিয়েছেন পায়েল। মামলার আরেক আসামি রাসেলকে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন একই আদালত।

বৃহস্পতিবার ভোররাতে শহরের নিশিন্দারা মণ্ডল পাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এই মামলার সন্দেহভাজন রাসেলকে। তারা স্বীকারোক্তি মোতাবেক গাবতলী উপজেলা থেকে গ্রেফতার করা হয় আরেক আসামি পায়েল শেখকে। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন পুলিশের কাছে।

বিকেলে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ পুলিশ তাদেরকে হাজির করে আদালতে। সেখানে বিচারক বিল্লাল হোসাইনের কাছে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন যুবদল কর্মী পায়েল শেখ। পরে গ্রেফতার আরেক আসামি রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী যমুনা নিউজকে জানান, আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া পায়েল শেখ ২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত সময়ে দায়ের হওয়া ৮টি নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলার আসামি। আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর রাসেলকে নেয়া হয়েছে পুলিশ হেফাজতে।

এর আগে দুপুরে জেলা পুলিশ কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পায়েল ও রাসেল হত্যার পরিকল্পনাসহ বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি জানান, জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিবাদের জেরেই খুন করার পরিকল্পনা করা হয় পরিবহণ ব্যবসায়ী নেতা মাহবুব আলম শাহীনকে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় এ নিয়ে মোটর মালিক গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতার কক্ষে বৈঠক করেন খুনিরা। পরে সেখান থেকে চারটি মোটর সাইকেল নিয়ে তারা উপশহর বাজার এলাকায় গিয়ে ছুরিকাঘাত করে ও কুপিয়ে খুন করে শাহীনকে। ঘটনায় জড়িত বাকী আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যহত আছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

শাহীন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মঙ্গলবার তার স্ত্রী পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুল ইসলামসহ ১১ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আমিনুল ছাড়াও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বড়কুমিরা এলাকার সোহাগ সরদার, ছোটকুমিরা সরদার পাড়া এলাকার বিদ্যুত, ছোটকুমিরা পশ্চিম পাড়ার মাহমুদ ও আজিজুল ইসলাম কাইল্লা এবং নিশিন্দারা মধ্য পাড়া এলাকার পায়েলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এজাহারে। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply