জাহিদুর রহমানের শপথ গ্রহণে স্থানীয় নেতা কর্মীদের ক্ষোভ

|

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
দলের শীর্ষ নেতারা সংসদে না যাওয়ার কথা বারবার বলে এলেও বিএনপি থেকে নির্বাচিত ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের বিজয়ী সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এতে করে অবাক হয়েছেন স্থানীয় নেতা কর্মীরা। এমন হঠাৎ করে তার শপথ নেয়াতে জেলা ও উপজেলা বিএনপিতে বেশ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

পীরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি কনক সেলিম জানান, এরপর দলের সিনিয়র নেতাদের নমিনেশন দেয়ার আগে তার দলের প্রতি কেমন আস্থা রয়েছে তা দেখে দেয়া উচিত। আর তা না হলে এর পূণরাবৃত্তি ঘটতে পারে।

পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, জাহিদুর রহমান অসুস্থতার কথা বলে বেশ কিছু দিন পূর্বে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ করে তার শপথ নেয়ার কথা জানতে পেরে তিনি সহ ঠাকুরগাঁও তিন আসনের নেতাকর্মীরা হতবাক হয়ে গেছেন। দলের সাথে এভাবে প্রতারণা করা তার ঠিক হয়নাই। এর প্রভাবে তৃণমূল বিএনপিতে খুব ক্ষতি হবে। তাই দলীয় ভাবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম সোহাগ জানান, এমন ভাবে দলের জেষ্ঠ্য নেতারা যদি দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নিজেদের স্বার্থটাকেই বড় করে দেখেন তাহলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দলের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নূরুজ্জামান নূরু বলেন, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ এভাবে শপথ নেয়ায় দলের বড় ধরণের ক্ষতি করে গেলেন, যা কখনোই পূরণ হবার নয়।

জেলা বিএনপির সহসভাপতি ওবাইদুল্লা মাসুদ জানান, ঠাকুরাঁওয়ের ৩ আসনের সাধারণ মানুষ ব্যক্তি জাহিদুল ইসলামকে ভোট দেন নাই, সাধারণ মানুষ বিএনপির প্রতীক ধানের শিষে ভোট দিয়েছিলো। গণতন্ত্র পু:ণরুদ্ধার ও বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য ধানের শিষে ভোট দিয়েছিলো। যে পরিবর্তণের জন্য বিএনপি এখনো লড়াই করে যাচ্ছে। কিন্তু জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বিএনপির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এই শপথ নিয়েছেন। যা শুধু জেলা বিএনপি নয়, সমগ্র দেশের বিএনপির জন্য ক্ষতি করে গেছে।

জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী বলেন, জাহিদুর রহমানের মতো সবাই যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে তাহলে বিএনপির প্রতি জনসাধারণ ও ভোটার দের বিশ্বাস কমে যাবে। তাই দ্রুত তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা উচিত।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন জানান, জাহিদুর রহমান বিএনপির বড় ক্ষতি করে গেলেন। কেন্দ্রিয় নেতাদের আদেশ অমান্য করে তার এভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করা একেবারেই উচিত হয়নি। এজন্য দল তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটাই প্রত্যাশা করে বিএনপি।

এবিষয়ে এমপি জাহদুর রহমান জাহিদুর রহমানের কাছে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেন নাই।

উল্লেখ্য, ১৯৯১ সাল থেকে জাহিদুর রহমান নির্বাচন করছেন। জাহিদুর রহমান ধানের শীষ প্রতীকে ৮৮ হাজার ৫১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমদাদুল হক। তিনি ৮৪ হাজার ৩৮৫ ভোট পান। এ ছাড়া মহাজোটের প্রার্থী মো. ইয়াসিন আলী নৌকা প্রতীতে ৩৮ হাজার ৬৩ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। জাতীয় পার্টির হাফিজউদ্দিন আহম্মেদ লাঙ্গল প্রতীকে ২৭ হাজার ১৮২ ভোট পেয়ে চতুর্থ হন।

টিবিজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply