ঘূর্ণিঝড় কেন হয়?

|

ধেয়ে আসা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ফনি শুক্রবার আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশে। হতে পারে জলোচ্ছ্বাসও। ইতিমধ্যে সমুদ্রবন্দরগুলোতে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সাধারণত সমুদ্রের উষ্ণপানির কারণে বায়ু উত্তপ্ত হয়ে সৃষ্টি হয় এসব ঝড়। অপেক্ষাকৃত উষ্ণ বাতাস হালকা হয়ে ওপরে ওঠে যায়। বিপরীতে ওপরের ঠাণ্ডা বাতাস নিচে নেমে আসে।

এতে বায়ুমণ্ডলের নিচের অংশে বায়ুর চাপ কমে যায়, তখন আশপাশের এলাকায় বাতাসে তারতম্য তৈরি হয়।

সেখানকার বাতাসের চাপ সমান করতে আশপাশের এলাকা থেকে প্রবল বেগে বাতাস ছুটে আসে। এভাবেই তৈরি হয় ঝড়।

ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা কমপক্ষে ২৬-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকা আবশ্যক।

একটি নির্দিষ্ট গভীরতা (কমপক্ষে ৫০ মিটার)পর্যন্ত এ তাপমাত্রা থাকতে হয়। এ জন্য সাধারণত কর্কট ও মকর ক্রান্তিরেখার কাছাকাছি সমুদ্রগুলোতে গ্রীষ্মকালে বা গ্রীষ্মের শেষে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়।

নিরক্ষীয় অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে পৃথিবীপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়ে গেলে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু হালকা হয়ে ওপরে ওঠে যায়।

এই শূন্যস্থান পূরণের জন্য মেরু অঞ্চল থেকে শীতল বায়ু উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণে নিরক্ষরেখার দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়।

কিন্তু পৃথিবীর ঘূর্ণনের প্রভাবে সৃষ্ট করিওলিস শক্তির কারণে এ বায়ু সোজাসুজি প্রবাহিত না হয়ে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়।

এ জন্য আমরা দেখি, উত্তর গোলার্ধে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরতে থাকে।

নিরক্ষরেখার ওপর এ শক্তির প্রভাব শূন্য। কাজেই এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূলে থাকলেও করিওলিস শক্তি ন্যূনতম থাকায়, নিরক্ষরেখার শূন্য ডিগ্রি থেকে ৫ ডিগ্রির মধ্যে কোনো ঘূর্ণিঝড় হতে দেখা যায় না। সাধারণত নিরক্ষরেখার ১০ ডিগ্রি থেকে ৩০ ডিগ্রির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply