পাবনায় মাদ্রাসা ছাত্রকে থানায় রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ

|

পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলায় মোসাদ্দিকুর রহমান মনি (১৫) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রকে রাতভর থানায় আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ছাত্রকে ঢাকার একটি বে-সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আহত মনি শহরের আলবাগ এলাকার মন্ডল গলির কাজী মোস্তাফিজুর রহমান ফরহাদের ছেলে এবং ঈশ্বরদী ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসার ১০ শ্রেণির ছাত্র। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাটি ‘তেমন নয়’ বলে দাবি করা হয়।

শুক্রবার (৩ মে ২০১৯) দুপুরে ওই মাদ্রাস ছাত্রের বাবা কাজী মোস্তাফিজুর রহমান ফরহাদ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, গত ২৮শে এপ্রিল রাত ১১টার দিকে উপজেলার পোস্ট অফিস মোড়ের একটি দোকানে কয়েল ও চকলেট কিনতে যায় তার ছেলে মনি। সে সময় ঈশ্বরদী থানার এস আই মোহাম্মদ আলী ও এ এস আই রায়হান হোসেন তাকে ‘এতো রাতে বাহিরে কেন, তুই কি করিস’ বলেই চড়-থাপ্পড় মেরে থানায় নিয়ে আটক করে।

পরবর্তীতে পরিবারের কাছে খবর গেলে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। ভাল ছেলের জন্য এতো টাকা দিতে অস্বীকার করায় রাতভর ওই ছাত্রকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করায় সেখানেই প্রসাব করে ফেলে মনি।

ছেলের বাবা কাজী মোস্তাফিজুর আরও জানান, রাতভর নিকটাত্মীয় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় পরদিন সকালে আহত অবস্থায় মনিকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মাদ্রাসা ছাত্র মনির বুকের হাড়ে স্পট ধরা পরেছে এবং তার ডান পায়ের হাঁড় ফেটে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে।

মনির বাবা কাজী মোস্তাফিজুর রহমান তার সন্তানের উপর এমন পুলিশি নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানান।

এদিকে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত এ এস আই রায়হান হোসেন ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেন। তবে এস আই মোহাম্মদ আলী বলেন, গভীর রাতে ওই ছেলেকে রাস্তায় পেয়ে থানায় রাখা হয়েছিল। টাকা কিংবা মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন এ ধরনের পুলিশী নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটেনি, ছেলেটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার স্বীকার হলে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসে, পরে তার বাবা এসে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply