অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে ৩ বন্ধু মিলে আরেক বন্ধুকে খুন

|

আসাদুজ্জামান ফারুক, ভৈরব:

ভৈরবে অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তিন বন্ধু মিলে হত্যা করল আরেক সহপাঠি বন্ধুকে । নিহত বন্ধুর নাম ফারদিন আলম রুপক (১৬)। তার বাবার নাম বিপ্লব মিয়া এবং বাসা ভৈরব বাজার টিনপট্রি।

গতকাল রাত সাড়ে ৯ টার দিকে শহরের ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার আবুবকর সিদ্দিকের ভবনে হত্যার ঘটনাটি ঘটে। হত্যায় অভিযুক্ত বন্ধুরা হলো ফজলে রাব্বি পিয়াল (১৬), আরাফাত পাটোয়ারী রাব্বি (১৬) ও রেজাউল কবির খাঁন (১৭)। এই তিনজনের বাড়ী ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া এলাকায়।

চার বন্ধুই ভৈরব শহরের কে বি পাইলট হাইস্কুলের ছাত্র এবং এবার তারা সবাই চলতি বছর এসএসসি পাশ করেছে। ভবন মালিক আবুবকর সিদ্দিক আজ শুক্রবার সকালে ঘটনাটি টের পেয়ে তিন বন্ধুকে আটক করে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ ও স্থানীয় কাউন্সিলর মোঃ দ্বিন ইসলামকে ঘটনাটি জানায়।

অভিযুক্তদের একজন আবুবকর সিদ্দিকের নাতী। বাকী দুজন একই ভবনের ভাড়াটিয়া। তারপর আতিক আহমেদ পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ নিহতের লাশ ভবনের ছাদ থেকে উদ্ধার করে এবং তিন বন্ধুকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের কাছে তারা রুপককে হত্যার কথা স্বীকার করে।

এ ব্যাপারে আজ রাতে বন্ধুসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন নিহতের বাবা।

পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ৯ টার দিকে আরাফাত পাটোয়ারী তার বন্ধু রুপককে মোবাইলে জরুরী কথা আছে বলে আবুবকর সিদ্দিকের ভবনে আসতে বলে। এর আগে অন্য দুই বন্ধু ফজলে রাব্বি পিয়াল ও রেজাউল কবিরের সাথে শলাপরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয় রুপককে ডেকে এনে তার বাবার কাছে মুক্তিপণের টাকা চাইবে। এদিকে রুপক বন্ধুর ফোন পেয়ে দ্রুত ওই ভবনে আসে।

রুপক আসার পর তিন বন্ধু মিলে তাকে ঝাপটে ধরে গলায় রশি বাঁধে। এসময় তাকে বলা হয়, ‘তোর বাবাকে বল টাকা দিতে।’ রূপক প্রথমে রাজী হয়নি। গলায় রশি দিয়ে পেচিয়ে ধরলে চাপে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। তারপর গলায় ছুরি চালালে সে ঘটনাস্থলে নিহত হয়।

রাতেই তিনজন মিলে বস্তায় তার লাশ ভর্তি করে ছাদে রেখে সবাই যার যার বাসায় চলে যায়। আজ সকালে ভবন মালিক লাশের গন্ধ পেয়ে ছাদে গিয়ে বস্তাটি দেখতে পান। পরে তার নাতীসহ তিনজনকে আটক করে খবর দিলে পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোখলেছুর রহমান জানান, মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্যই তিন বন্ধু মিলে রুপককে হত্যা করে। তারা পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। এব্যাপারে তার পরিবার মামলা করার পর অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply