দিলকুশায় খোঁড়াখুঁড়ি জনদুর্ভোগ চরমে

|

দিলকুশায় অন স্ট্রিট পার্কিংয়ের স্থানে ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ শুরু হওয়ায় ব্যাপক জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। মেটলাইফ আলিকো ভবন থেকে জনতা ব্যাংকের লোকাল শাখা পর্যন্ত রাস্তাটির ডান পাশে এক সপ্তাহ আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) উদ্যোগে ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়।

যদিও একই স্থানে অন স্ট্রিট পার্কিংয়ের কাজ করে আসছিল ডিএসসিসি’র তালিকাভুক্ত আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ শুরু হওয়ায় কার্যত পার্কিংয়ের উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এ অবস্থায় দিলকুশায় বিভিন্ন অফিসের গাড়িগুলো প্রধান সড়কের ওপরেই পার্কিং করে রাখা হচ্ছে। ড্রেনেজ সিস্টেমের খোঁড়াখুঁড়ি করা স্থানের পাশেই গাড়ি পার্কিং করায় মূল রাস্তায় চলাচলের জায়গা সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। যে কারণে দিলকুশায় আসা জনসাধারণের দুর্ভোগ এখন চরমে।

উত্তরার আজমপুর থেকে আসা ইকবাল এ প্রতিবেদককে দুঃখের সঙ্গে বলেন, আমাকে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ব্যাংকিংয়ের কাজে দিলকুশায় আসতে হয়। ব্যাংকিংয়ের কাজ শেষ করতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লেগে যায়।

এ খোঁড়াখুঁড়ির কারণে আমাকে বাধ্য হয়েই গাড়িটি প্রধান সড়কের ওপর পার্কিং করতে হচ্ছে। ফলে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিফাত এন্টারপ্রাইজ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে এক বছর মেয়াদে এ রাস্তায় অন স্ট্রিট পার্কিংয়ের উন্নয়ন কাজের ওয়ার্ক অর্ডার পেয়ে কাজ শুরু করে।

ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত একটানা ৫ মাস কাজ চলার একপর্যায়ে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে ডিএসসিসির আরেক তালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শহীদ এন্টারপ্রাইজ একই স্থানে ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নয়ন কাজ শুরু করে।

ফলে এক প্রকার বাধ্য হয়েই রিফাত এন্টারপ্রাইজকে অন স্ট্রিট পার্কিংয়ের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখতে হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ এন্টারপ্রাইজের সাব-কন্ট্রাক্টর ফজলুর মোবাইল ফোনে বলেন, আমরা তো কোনো নিয়মের ব্যত্যয় করিনি। যেভাবে যখন থেকে কাজ পেয়েছি, সেভাবেই তখন থেকে কাজ করে যাচ্ছি।

আশা করি যথাসময়ে আমাদের কাজ শেষ করতে পারব। আমাদের এ ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নয়নের কাজ শেষ করতে আরও ৫-৬ মাস লাগবে। এটা আমাদের কোনো বর্ধিত সময় নয়, বরাদ্দ করা সময়। তবে একই স্থানে যদি ডিএসসিসির অন্য কোনো কাজ চলে তবে আমরা তা মিলেমিশে সমন্বয় করেই শেষ করব।

এতে সাময়িকভাবে হয়তো জনগণকে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে সুফল পেতে আশা করি জনগণ এ দুর্ভোগটুকু সয়ে নেবে।

একই স্থানে অন স্ট্রিট পার্কিংয়ের কাজ তদারককারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিফাত এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বেল্লাল হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নয়ন কাজের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।

তবে দুটি কাজ একই স্থানে নির্ধারিত হওয়ায় আমাদের পার্কিংয়ের উন্নয়ন কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হয়তোবা আমরা এ কাজটি শেষ করতে পারব না।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাছে আমরা সময় বাড়াতে ইতোমধ্যে আবেদন করেছি। আমার বিশ্বাস সার্বিক দিক বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ আমাদের আরেকটু সময় বাড়িয়ে দেবে। ওই বর্ধিত সময়টুকু তিন-চার মাসের বেশি হবে না।

উন্নয়ন কাজের স্বার্থে অনিচ্ছাকৃত এ দুর্ভোগ পোহানোর জন্য সাধারণ জনগণের প্রতি আমরা আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে ভবিষ্যতে নিরবচ্ছিন্ন চলাচলের জন্য এ সাময়িক কষ্টটুকু আশাকরি সাধারণ জনগণ বিবেচনার সঙ্গে মেনে নেবে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান মোবাইল ফোনে বলেন, অন স্ট্রিট পার্কিংয়ের উন্নয়ন কাজটি আমার সঙ্গে সম্পর্কিত। আর ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নয়ন কাজটি দেখে আমাদের প্রকৌশল বিভাগ।

ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবেই একই স্থানে দুটি উন্নয়ন কাজ শুরু হয়ে গেছে। যদি একটি কাজের জন্য আরেকটি কাজ সাময়িক বন্ধ রাখতে হয় সে ক্ষেত্রে সময় বাড়ানোর দিকটি বিবেচনা করে দেখা হবে। আগামী দিনে একটি সুন্দর পরিবেশে অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে সাধারণ জনগণকে সাময়িক এ দুর্ভোগ মেনে নিতে অনুরোধ করব।
সূত্র: যুগান্তর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply