পার্লামেন্টে প্রথম দিনেই মুসলিমদের নিয়ে কংগ্রেসকে মোদির খোঁচা

|

ভারতে দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার আগেই নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, সরকারের লক্ষ্য সংখ্যালঘুদের বিশ্বাস অর্জন করা।

মন্ত্র হবে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর সঙ্গে ‘সবকা বিশ্বাস’। দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৫ জুন) পার্লামেন্টে প্রথম বক্তৃতায় মোদি মুসলিম নারীদের ক্ষমতায়ন না করার জন্য কংগ্রেসকে দুষলেন। মোদি আরও বলেন, আমি চাই কংগ্রেস তিন তালাক বিলে সমর্থন করুক।

পাল্টা জবাবে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ঝাড়খণ্ডে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে মারা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতার কথা মনে করিয়ে দেন।

বিজেপিশাসিত ঝাড়খণ্ডে মুসলিম যুবককে চোর আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে মারার আগে ‘জয় শ্রী রাম’ ও ‘জয় হনুমান’ বলতে বাধ্য করা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার পর রাহুল বলেন, এ নিয়ে বিজেপিশাসিত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের জোর গলায় কথা বলা নেতাকর্মীদের নীরবতা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক।

রাজ্যসভায় কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ কটাক্ষ করে বলেন, এককালে যিনি টুপি পরতে অস্বীকার করেছিলেন, ইফতারের নিমন্ত্রণে যেতে চাননি, এখন কেন তার মুসলিমদের আস্থা অর্জনের দরকার হচ্ছে?

রাজীব গান্ধীর সরকারের মন্ত্রী আরিফ মহম্মদ খানকে উদ্ধৃত করে মোদি বলেন, রাজীব সরকারের এক মন্ত্রী বলেছিলেন- মুসলিমদের উত্থান ঘটানো কংগ্রেসের কাজ নয়; তারা নর্দমায় পড়ে থাকতে চাইলে থাকতে দাও।

মোদির এমন প্ররোচনাতেও কংগ্রেস নেতারা মেজাজ ঠিক রাখেন। দলের কয়েকজন এমপি প্রতিবাদ করায় সোনিয়া-রাহুল তৎক্ষণাৎ তাদের থামিয়ে দেন। এ সময় মোদি বলেন, সন্দেহ থাকলে আপনাদের ওই সাক্ষাৎকারের ইউটিউব লিংক পাঠিয়ে দেব।

১৯৮৫ সালে শাহ বানু নামে এক মুসলিম নারীর খোরপোষ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিমকোর্ট বিবাহ বিচ্ছিন্ন মুসলিম নারীদের খোরপোষ পাওয়ার অধিকার দেয়।

সাক্ষাৎকারে আরিফের যুক্তি ছিল- আধুনিক মনস্ক রাজীব নতুন বিল এনে সুপ্রিমকোর্টের রায় উল্টে দিতে চাননি। তিনি বরং নোটে লিখেছিলেন- মৌলবাদের সঙ্গে আপস করা চলবে না। নরসিংহ রাও, অর্জুন সিংহ, নারায়ণ দত্ত তিওয়ারির মতো নেতারা তাকে চাপ দিয়েছিলেন।

তাদের যুক্তি ছিল, কংগ্রেসের কাজ মুসলিমদের সংস্কার করা নয়; মুসলিমরা নর্দমায় পড়ে থাকতে চাইলে থাকুক। রক্ষণশীল মুসলিম সমাজ শাহ বানুর রায়ের প্রতিবাদ করায় মুসলিমদের জন্য নতুন করে দেওয়ানি আইন প্রণয়ন করে।

বিজেপি প্রথম থেকেই মুসলিমদের আলাদা আইনের বদলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে। দ্বিতীয় দফায় বাড়তি ক্ষমতা নিয়ে এসে মোদি এবার তা চালু করার চেষ্টা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply