অনুমোদন-চিকিৎসক-সেবিকা কিছুই নেই, তবুও চলছে ক্লিনিক!

|

বগুড়া ব্যুরো: অনুমোদনহীন বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অভিযান শুরু করেছে বগুড়া জেলা প্রশাসন। আজ বুধবার অভিযানের শুরুতেই শহরের আস্থা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে সিলমোহরসমেত সেটি বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

পাশাপাশি বেশ কিছু অনিয়মের কারণে ৭২ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেয়া হয়েছে ক্লিনিক মালিককে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের ভাই পাগলা মাজার লেনের ওই ক্লিনিকে অভিযান শুরু করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযান চলাকালে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আদালতকে অনুমোদনের কোনো প্রমাণপত্র দেখা পারেন নি। একসময় অনুমোদন থাকলেও চার বছর আগে সেটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

অভিযানে থাকা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ফারজানুল ইসলাম যমুনা নিউজকে জানান, ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক তো পরের বিষয়, নিবন্ধিত কোনো সেবিকাও নেই। অথচ কয়েকটি তলায় বেশ কিছু রোগী ভর্তি রেখেছেন তারা। নোংরা প্যাথলজি কক্ষে টেকনোলজিস্ট হিসেবে যিনি রয়েছেন, তারও কোনো অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি নেই। অথচ, তিনি দিব্যি রোগীদের প্যাথলজিকাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যাচ্ছে দেড় বছর ধরে।

অস্ত্রপচার কক্ষসহ পুরো ক্লিনিকেই স্বাস্থ্য-সহায়ক কোনো পরিবেশ নেই উল্লেখ করে এই চিকিৎসক জানান, বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনা করতে গেলে বিধি মোতাবেক ৩৬ ধরণের চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির দরকার পড়ে। ৩/৪টি ছাড়া বলতে গেলে এসবের কিছুই নেই এখানে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে অভিযান পরিচালনার পর ভ্রাম্যমাণ আদালত ‘মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার, ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরি নিয়ন্ত্রন অধ্যাদেশ’ এবং ‘ভোক্তা অধিকার আইনে’র বেশ কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের দায়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে ৭২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। পাশাপাশি সিলগালা করে দেয়া হয় বেসরকারি এই হাসপাতালটি। ভর্তি থাকা রোগীদের দ্রুত সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশও দেয়া হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম কামরুল ইসলাম জানান, অনুমোদনহীন এমন বেসরকারি হাসপাতালগুলো বন্ধে জেলা প্রশাসনের এমন অভিযান চলমান থাকবে।

স্থানীয়রা জানান, একসময় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করা তৌফিকুর রহমান নামের এক ব্যক্তি এই ক্লিনিকের মালিক। তার অবর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন তার শ্যালক নাজমুল হোসেন। বছর পাঁচেক ধরে পাগলা মাজার লেনের পাঁচতলা ভবনটি ভাড়া নিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন তারা। ২০১৮ সালে র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও এই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে অর্থদণ্ড করেছিলেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply