ডিআইজি মিজানের আগাম জামিনের আবেদন

|

পুলিশের বিতর্কিত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও অবৈধ সম্পদ এবং মানি লন্ডারিং মামলার আসামি মিজানুর রহমান হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের এ আবেদন করেন তিনি।

রোববার দুদকের আইনজীবী মো.খুরশীদ আলম খান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়েদুল হাসান ও বিচারপতি কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত ২৫ জুন রাতে তাকে বরখাস্ত করে পুলিশ অধিদফতরে সংযুক্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আদেশ জারি করা হয়।

এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিআইজি মিজানকে খুঁজে পাচ্ছে না দুদক টিম। সোমবার মামলা রুজুর পর থেকেই তিনি লাপাত্তা। তার খোঁজে দুদকের একাধিক টিম কাজ করছে। তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তিনি দেশ ছেড়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই।

আরও জানা গেছে, ডিআইজি মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না ওরফে রত্না রহমান (দুদকের মামলায় আসামি) ২৪ জুন রাতে দেশত্যাগ করেছেন। তিনি কীভাবে কোন ফ্লাইটে দেশ ছাড়লেন, তা জানতে চেয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এদিকে ডিআইজি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলাটি মঙ্গলবার থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিমকে এ তদন্তভার দেয়া হয়েছে। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ডিআইজি মিজানসহ যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের বিষয়ে আইনগত সিদ্ধান্ত নেবে তদন্ত টিম। ওই টিম প্রয়োজনে যেসব স্থানে যাওয়া দরকার, সেসব স্থানে যাবে। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। দুদক মুখ দেখে নয়, দুর্নীতির ঘটনা দেখেই তদন্ত করবে।

উল্লেখ্য বহু নাটকীয়তার পর গত ২৪ জুন ডিআইজি মিজানুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অপর তিন আসামি হলেন- মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না ওরফে রত্না রহমান, ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসান।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তিন কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০০৪ সালের দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা, ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং আইনের ৪(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দুদকের ঢাকা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে দায়ের করা হয়।

দুদক পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। যেটি ছিল দুদকের সংশোধিত বিধি গেজেট হওয়ার পর নিজস্ব কার্যালয়ে প্রথম মামলা। মামলার পর দুদক টিমের পক্ষ থেকে ডিআইজি মিজানসহ চার আসামির বিদেশ গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। এর পরপরই তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

ওইদিন মামলা ছাড়াও দুদকের ঘুষের ঘটনায় দুদকের পক্ষ থেকে আগামী ১ জুলাই ডিআইজি মিজান ও দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়। ওইদিন সকাল ১০টায় ডিআইজি মিজানকে এবং দুপুর ২টায় বাছিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহর নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply