‘স্যার ঘুমাচ্ছেন, এখন ডাকা যাবে না’

|

প্রায় সব সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা তাদের প্রতিদিনের কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত। ঠিক তখনই উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলী তার অফিসের চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছিলেন।

আর তার টেবিলের সামনেই সরকারি এ কর্মকর্তার ঘুম ভাঙার অপেক্ষায় বসে আছেন কয়েক সেবাপ্রার্থী। তাদেরই একজন সংশ্লিষ্ট অফিসের পিয়নকে ডেকে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। কিন্তু আবুল নামের সেই পিয়ন সাফ জানিয়ে দেন, ‘স্যার ঘুমাচ্ছেন। এখন ডাকা যাবে না।’ ফলে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয় সেবাপ্রার্থীদের। এ ঘটনা ঘটেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে।

জানা যায়, মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে হাতীবান্ধা উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলীর অফিসে যান স্থানীয় সেবাপ্রার্থীরা। কিন্তু অফিসে ঢুকেই দেখেন ওই কর্মকর্তা চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছেন। পাশেই কম্পিউটারে একজন কাজ করছেন, আর পিয়ন আবুল অন্যদিকে বসে আছেন।

ফলে উপজেলার পাটিকাপাড়া এলাকা থেকে তার মামিসহ সেবা নিতে আসা আবদার রহমান টেবিলের সামনে চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু বেশকিছু সময় গড়িয়ে গেলেও ঘুম ভাঙছিল না উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলীর।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সেবা নিতে আসা আবদার রহমান জানান, তার প্রয়াত মামা ইমরান হোসেন সরকারি চাকরি করতেন। কিন্তু সম্প্রতি তার পেনশনের বই হারিয়ে যায়। ফলে তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম ভাগিনা আবদারকে নিয়ে মঙ্গলবার হাতীবান্ধা উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে ব্যাংকে।

এরপর ব্যাংক কর্মকর্তার পরামর্শে বিকাল ৩টার দিকে আবারও উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কাছে যান। কিন্তু অফিসে ঢুকেই দেখেন, কর্মকর্তা শাহাজান আলী চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছেন। বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকার পর অফিসের এক পিয়নকে তাকে ডেকে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন আবদার। কিন্তু আবুলের সাফ কথা, ‘স্যার ঘুমাচ্ছেন। এখন ডাকা যাবে না।’

একই কথা বলেন হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু। তিনি বলেন, ‘ওই অফিসে আসা এক সেবাপ্রার্থী আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। ফলে আমি নিজেই গিয়ে দেখি উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা অফিসের চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছেন। আর টেবিলের সামনে কয়েক সেবাপ্রার্থী বসে আছেন।’

এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলী বলেন, ‘আমার শরীর ভালো আছে। আমি অফিসে বসে ঘুমাইনি। আসেন চা খেয়ে যান।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply