এবার ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ উচ্চারণ করলেন পোপ

|

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের পরিচয় ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে তুলে ধরা, না ধরা নিয়ে রয়েছে অনেক লুকোচুরি, অনেক বিতর্ক। মিয়ানমার সরকারের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিয়ে অনেক দেশের নেতারা শব্দটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকেন। গত তিন দিন ধরে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরে আসা পোপ ফ্রান্সিসও মিয়ানমারে থাকাবস্থায় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেননি।

মূলত মিয়ানমারের সংখ্যালঘু খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার কথা মাথা রেখে ওখানকার খ্রিষ্টধর্মীয় নেতারা শব্দটি ব্যবহার না করতে পোপের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, সেই আহ্বান আমলে নিয়েই পোপ শব্দটির ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন।

ঢাকায় এসেও প্রথম দিন প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের সাথে সাক্ষাতে এবং অন্যান্য কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দিলেও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি কোথাও তিনি ব্যবহার করেননি, বা করতে হয়নি।

তবে আজ শুক্রবার বিকালে ঢাকার রমনায় চার্চে এক সর্বধর্ম সভা শেষে ১৬ সদস্যে রোহিঙ্গা প্রতিনিধ দলকে সাক্ষাৎ দেন পোপ। সাক্ষাৎ শেষে পোপ মন্তব্য করেন, “The presence of God today is also called Rohingya”। অর্থাৎ, ‘আজকে ঈশ্বরের অস্তিত্বকেও রোহিঙ্গা বলা যায়’।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস তাদের প্রতিবেদনে এই পোপের এই বাক্যটি ব্যবহার করেছে।

পোপ ফ্রান্সিস নারী-শিশুসহ ১৬ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সবার সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেন এবং তাদের কথা শোনেছেন খ্রিষ্টান ধর্মগুরু।

এসময় তিনি রোহিঙ্গা উদ্ভাস্তুদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের অবস্থা খুবই করুণ তা উপলব্ধি করতে পারি। আপনাদের জন্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

এর আগে রমনা ক্যাথিড্রালে এক সর্বধর্ম সভায় বক্তব্যে দেন পোপ। এসময় তিনি বলেন, উন্মুক্ত হৃদয়ে ভালোর পথে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দান, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ এবং সমাজে দুর্বলদের প্রতি যত্নবান হওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রশংসা করে পোপ বলেন, ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ যে কারো কাছে অনুকরণীয় হতে পারে।

অবশ্য চলতি সফরের আগে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বরতার মুখে নিকট অতীতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ একাধিকবার ব্যবহার করেছিলেন ফ্রান্সিস। সম্প্রতি একবার তিনি বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠিকে সম্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার রোহিঙ্গা ভাই বোনেরা।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply