অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

|

নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। ১৫ দিনের ব্যবধানে ঢাকায় কোনো কোনো পণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সবজির দাম।

৫০ টাকার কমে এক কেজি কোনো সবজি পাওয়া যায় না। এ ছাড়া মাছ, ডিম ও মসলার দামও বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টি ও বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে রাজধানীতে পণ্যের সরবরাহ কম। এতে পণ্যের দামে প্রভাব পড়েছে। তবে পেঁয়াজের দাম আগের চেয়ে কিছুটা নিম্নমুখী।

মতিঝিলের সবজি বিক্রেতা জালাল হোসেন বলেন, বর্তমানে ঢাকায় সবজির সরবরাহ একেবারে কম। আড়ত থেকে অনেকে মাল (পণ্য) আনতে পারেনি। তার মতে, কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টির কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।

এ ছাড়া মানিকগঞ্জসহ ঢাকার আশেপাশের এলাকায় বন্যায় সবজির ক্ষেত ডুবে গেছে। এসব কারণে দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, সামনে বৃষ্টি হলে পণ্যের দাম আরও বাড়বে।
বুধবার রাজধানীর বাজারগুলোতে বেশি দামে সবজি বিক্রি হয়েছে। পাকা টমেটো ১৩০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ১৫ দিন আগে এর দাম ছিল ৬০-৮০ টাকা। আর এক সপ্তাহ আগে দাম ছিল ৮০-১০০ টাকা।

অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। মতিঝিলে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ মানভেদে ১৮০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১৫ দিন আগে এর দাম ছিল ১০০-১২০ টাকা। এ হিসাবে পণ্যটির দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।

প্রতি কেজি গাজর ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়। গত সপ্তাহে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া করলা বুধবার ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ঝিঙ্গে ও ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়। পটোল ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হয়। গত সপ্তাহে ৪০-৫০ টাকার বেগুন বুধবার ৬০-৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

রাজধানীর নয়াবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আল-আমিন বলেন, বন্যার কারণে রাজধানীতে সবজির সরবরাহ কম। পাইকারি বাজারে দাম বাড়তি। এ কারণে খুচরায়ও দাম বেশি। চলতি মাসের শুরুতে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়।

কিন্তু দু’দিন পর এক লাফে দাম কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে ৫০-৫৫ টাকা হয়ে যায়। তবে বর্তমানে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। বুধবার রাজধানীর বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর একটু নিম্নমানের দেশি পেঁয়াজ ৩৮ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে।

তবে এক মাস আগের তুলনায় এ দাম এখনও চড়া। অন্যদিকে দেশি রসুন মানভেদে ১৪০-১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ১২০-১৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

তবে এ রসুন এক মাস আগে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দারুচিনি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনপ্রতি ডিমে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে এক ডজন ডিম ১১০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

আগে ছিল ৯০-১০০ টাকা। তবে অভিজাত শপিং মলে এর দাম আরও বেশি। মাছের দাম কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৪০-১৬০ টাকা, পাঙাশ ১৬০-১৭০ টাকা এবং চাষের রুই ৩৫০-৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

১৫ দিন আগের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেশি। দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই দামি মাছও। বুধবার প্রতি কেজি পাবদা ৬০০-৭০০ টাকা, টেংরা ৭০০-৭৫০ টাকা, শিং ৪০০-৫৫০, বোয়াল ৫০০-৭০০, চিড়িং ৬০০-৮০০ এবং চিতল মাছ ৫০০-৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেশি। নয়াবাজারের মাছ বিক্রেতা জসিম হাওলাদার যুগান্তরকে বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে সব ধরনের মাছের দাম চড়া।

এর কারণ হল সরবরাহ কম। আড়তে মালিকরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এখানে খুচরা বিক্রেতাদের কিছুই করার নেই। তিনি বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই মাছের দাম কমবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply