ব্রাহ্মণ বিয়ে করে জেলে: হাইকোর্টে হরিজন যুবকের জামিন

|

ব্রাহ্মণ বর্ণের মেয়েকে বিয়ে করার পর শ্বশুরের দায়ের করা অপহরণ মামলায় ১৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হরিজন তুষার দাসকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে তুষার দাসের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, স্বামী তুষার দাস হরিজন সম্প্রদায়ের ও স্ত্রী সুস্মিতা ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের। দুজনে ভালোবেসে বিয়ে করেন প্রায় দুই বছর আগে।

তাদের এ বিয়ে মেনে নিতে পারেননি মেয়ের বাবা-মা। এ কারণে তুষারের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন মেয়ের মা।

অপহরণের এ মামলায় তুষারকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। সুস্মিতা দেবনাথ স্বেচ্ছায় তুষার দাসকে বিয়ে করার কথা বললেও তার কথা আদালত আমলে নেননি।

১৪ বছর কারাদণ্ড দিয়ে রায়ে আদালত বলেন, সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসামি তুষার দাস ওরফে রাজ ভিকটিম সুস্মিতা ওরফে অদিতিকে অপহরণ করে নিয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

আসামি শিশু সুস্মিতাকে বিয়ে করবেন এ আশ্বাস দিয়ে অপহরণ করেছেন, যা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হলো।

গত ৩ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তুষার। এর পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তিনি আপিল করেন। এর পর স্বামীকে কারামুক্ত করতে তিন মাসের কন্যাশিশুকে নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হন স্ত্রী সুস্মিতা দেবনাথ।

সুস্মিতা দেবনাথ বলেন, আমার একটিই অপরাধ, আমি ব্রাক্ষণ বর্ণের মেয়ে হয়ে হরিজন বর্ণের ছেলেকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি।

আইনের মারপ্যাঁচে আমাদের জীবন আজ বিপন্ন। ৮৮ দিন বয়সের শিশুসন্তান নিয়ে আমাকে ফেরারি হয়ে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। মিথ্যা মামলা থেকে আমার স্বামীকে মুক্তি দিন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply