সপরিবারে ওএমএস কার্ড আত্মসাৎ করলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আ’লীগ নেতা

|

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পরা কর্মহীন ও হতদরিদ্রদের জন্য ত্রাণ সহায়তার জন্য বরাদ্দ ওএসএম কার্ডের তালিকায় রয়েছে পাঁচতলা ভবনের মালিক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও তার স্ত্রী-সন্তান, শ্যালকের নাম।

জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষ ওএমএস চালু হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায়। ৯ হাজার ৬’শ জনকে দেয়া হচ্ছে এই সুবিধার কার্ড। আর এতেই নিজের নাম সহ আত্মীয় স্বজনের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ডের পাঁচতলা ভবন মালিক জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক শাহ আলম।

জানা যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ১০ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভাই-আত্মীয় স্বজন,ওএমএস ডিলারের পরিবার ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের নামে ঠাসা তালিকা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ওএমএস ডিলার জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মো. শাহ আলমের পরিবার ও স্বজনদের কারো নামই বাদ নেই রেশন কার্ডের তালিকায়।

তালিকার ১৬ নম্বরে রয়েছে তার স্ত্রী মোসাম্মৎ মমতাজ আলমের নাম। ১২ নম্বরে মেয়ে আফরোজার নাম। তার তিন ভাই বোন মো. সেলিম, মো. আলমগীর ও শামসুন্নাহারের নাম রয়েছে ৮, ৯ ও ২৭ নম্বর ক্রমিকে। আরেক ভাই খোরশেদ মিয়ার ছেলে নাছিরের নাম রয়েছে ৭ নম্বরে যদিও নাছির প্রবাসী। ৩ নম্বরে রয়েছে শ্যালক মো. তাজুল ইসলামের নাম। শ্যালকের স্ত্রী আসমা ইসলামের নাম ৫ নম্বরে। আরেক শ্যালকের স্ত্রী মোসাম্মৎ জান্নাতুল ইসলামের নাম রয়েছে ১০ নম্বরে। বোনের তিন দেবর মতিউর রহমান, মাহবুবুর রহমান, লুৎফুর রহমানের নাম রয়েছে ৭২, ৭৩ ও ৭৪ নম্বর ক্রমিকে। আরেক শ্যালক প্রবাসী শফিকুল ইসলামের নামও রয়েছে তালিকার ১৩ নম্বরে।

মো. শাহ আলমের কাছে তালিকায় পরিবারের সদস্যদের নাম থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এই বিষয়টা কাউন্সিলর বলতে পারবে। আমার ভাই মহল্লার সর্দার। আমাকে বলেছে মহল্লার মধ্যে হতদরিদ্র এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত যারা আছে তাদের তালিকা করার জন্য। এই তালিকা তার (কাউন্সিলরের) কাছে পাঠানো হয়েছে। সে এবং পৌরসভা যাচাই-বাছাই করে ফাইনাল করবে। তাছাড়া আমি কোনও কার্ড বণ্টন করিনি। আমি হলাম ডিলার। ডিলার কোন কার্ড দিতে পারেনা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ১০ ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকবুল হোসেন তার তিন ভাইয়ের নাম থাকার বিষয়ে বলেন, থাকতেই পারে। হালে তারা দুর্বল এবং আলাদা আলাদা রয়েছে। তালিকায় একই পরিবারভুক্ত সবার নাম উঠার বিষয়ে তার জানা নেই বলে জানান তিনি।

এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান সাংবাদিকদের বলেন ১০ জন স্বাক্ষর দিয়ে একটি তালিকা যখন জমা করে তখন খাদ্য অফিসার সেটি গ্রহণ করে। তার আগে মেয়র সেটি অনুমোদন করেন। কোন ত্রুটি থাকলে মেয়র এর জবাব দেবেন। আমাদের পক্ষে তো ঘরে ঘরে গিয়ে তা যাচাই করা সম্ভব নয়। কোন অভিযোগ পেলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেব।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply