শহুরে জীবনে বাড়ির ছাদে সবুজ উদ্যান

|

শহুড়ে জীবনে বাড়ির ছাদে সবুজ উদ্যান

জীবন-জীবিকার তাগিদে গ্রাম ছেড়ে শহরে থাকতে হয় অনেককেই। এই উন্নত জীবনযাপনের মাঝেও আমাদের মন কেঁদে ওঠে গ্রামের এক টুকরো সবুজের জন্য। কিন্তু শহরে যে সারি সারি উঁচু দালানবাড়ি, সবুজের দেখা মেলে না সহজে। তাই বাসার ব্যালকনিতে কিংবা ছাদে করতে পারেন বাগান। গ্রামের স্নিগ্ধতা না থাকলেও টুকিটাকি গাছেও শান্তি।

এছাড়া বাড়ির ছাদে সহজেই করা যায়সবজি আর ফলের চাষ। ব্যালকনিতে যেমন জায়গার অভাব, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের চলাচল না থাকা ইত্যাদি সমস্যা থাকে, ছাদে তা নয়। উপযুক্ত মাটি আর যত্ন পেলেই গাছ বেড়ে উঠবে তড়তড়িয়ে।

একটি বিষয় সাধারণ মাটিতে আর বাড়ির ছাদে গাছ লাগানো কিন্তু একই কথা নয়। ছাদে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে নিতে হয় বাড়তি কিছু যত্ন। আপনি কী গাছ লাগাতে চাইছেন তার ওপর নির্ভর করছে কতটুকু জায়গায় কিভাবে লাগাবেন। বড় গাছ হলে গাছ লাগানোর পাত্রটিও বড় হতে হবে ইত্যাদি।

টবে গাছ লাগানোর সুবিধা হল খুব সহজে এগুলো স্থানান্তারিত করা যায়। সাধারণত যে আকারের টব বাসাবাড়িতে থাকে, তার থেকে বড় মাপের টবে গাছ লাগান। তাহলে ফলন ভালো হবে। এক্ষেত্রে সিমেন্টের তৈরি টব ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ব্যবহার করতে হবে পর্যাপ্ত জৈব সার।

ছাদে গাছ লাগানোর জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি হল হাফড্রাম। এক্ষেত্রে হাফড্রামের নিচে ছিদ্র করে সেখানে এক ইঞ্চি পরিমাণ উচ্চতায় ইটের টুকরো বসাতে হয়। তার উপরে এক ইঞ্চি পরিমাণ জৈব সার বা পচা গোবর দিতে হবে। ফলে গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত পানি জমে থাকবে না কখনই। শাক-সবজি বা ফুলের ক্ষেত্রে ছোট বা মাঝারি টব হলেও চলে তবে ফলের গাছ হলে পাত্র বড় হলেই সুবিধা হয়।

ছাদের চারদিকে ২ ফুট প্রস্থের দুই পাশে ১.৫ ফুট উঁচু দেয়াল ৩ ইঞ্চি গাঁথুনির নেট ফিনিশিং ঢালাই দিয়ে তৈরি করে তার মাঝের জায়গায় প্রথমে এক ইঞ্চি ইটের সুড়কি বা খোয়া, পরের এক ইঞ্চি গোবর সার দেয়ার পর বাকি অংশ দুই ভাগ মাটি ও এক ভাগ গোবরের মিশ্রণ দিয়ে ভরাট করে স্থায়ী বেড তৈরি করা হয়। এখানে মোটামুটি বড় আকারের ফলের গাছ থেকে শুরু করে সবরকম গাছই লাগানো যায়।

গাছ থেকে বেশি ফল পেতে হাইব্রিড জাতের ফলদ গাছ লাগাতে পারেন। আম্রপালি ও মলি­কা জাতের আম, পেয়ারা, আপেল কুল, লেবু, ডালিম, করমচা ইত্যাদি গাছ লাগাতে পারেন। সবজি ও ফুলের ক্ষেত্রে যা কিছু পছন্দ, তাই চাষ করতে পারেন।

অবশ্যই ছাদে গাছ লাগানোর পরে নিয়মিত যত্ন উচিত। কারণ গাছে সঠিকভাবে পুষ্টি না পৌঁছালে ফলন ভালো হবে না। এছাড়া জানতে হবে সার দেয়ার সঠিক সময় ও পরিমাণ। পানি নিষ্কাশনের পথও রাখতে হবে। নিয়মিত গাছ পরিষ্কারও করতে হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply