চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেললাইন সংযোগ স্থাপন, ভারতীয় ইঞ্জিনের ট্রায়াল

|

চিলাহাটী-হলদিবাড়ি রেলপথ স্থাপনের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ ৫৫ বছর পরে বাংলাদেশের সাথে স্থাপিত হতে যাচ্ছে ভারতের রেলপথে যোগাযোগ। এ পথে যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি চলাচল করবে পণ্যবাহী ট্রেনও।

নীলফামারীর চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি রেলপথ সংযোগের পর এবার বাংলাদেশ সীমান্ত ছুঁয়ে পরীক্ষামূলক চলাচল করলো ভারতীয় একটি রেলইঞ্জিন। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভারতের কুচবিহার জেলার হলদিবাড়ি সীমান্ত রেলওয়ে স্টেশন পেরিয়ে ইঞ্জিনটি বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছে। সেখানে ১০ মিনিট অবস্থানের পর পুনরায় ছেড়ে যায় হলদিবাড়ির উদ্দেশ্যে। পরে ওই সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় রেল বিভাগের কর্মকর্তারা স্থানীয় জনগণের সাথে মতবিনিময় করেন।
ওই পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের নেতৃত্বে ছিলেন ভারতের উত্তর-পূর্ব রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী জেপি শিং, উপ-প্রধান প্রকৌশলী ভিকেমিনা ও নির্বাহী প্রকৌশলী পিকেজে। এ সময় ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুর রহীম, নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম।

গত মঙ্গলবার বিকালে ডোমার উপজেলার চিলাহাটি সীমান্তের ৭৮২ নম্বর পিলারের কাছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতিতে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথের সংযোগ স্থাপিত হয়। সে পথ দিয়ে ভারতের অংশে পরীক্ষামূলক রেল ইঞ্জিন চলাচল করে।

রেলওয়ে সূত্রমতে, ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তৎকালীন পাকিস্তান ও ভারত সরকার চিলাহাটী-হলদিবাড়ী রেলপথের লাইন তুলে ফেলে। সেই থেকে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। এ রেলপথটিকে পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয় দুই দেশের সরকার। বাংলাদেশ সরকার বন্ধ থাকা রেলপথটি চালু করতে ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয়ে চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ ও ২ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার লুপলাইন স্থাপন করে। ভারত সরকার ৩১ কোটি রুপি ব্যয়ে হলদিবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপন শেষে পরীক্ষামুলক রেলইঞ্জিন ট্রায়াল দেয়।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুর রহীম বলেন, ভারত তাদের অংশে রেলপথ স্থাপন কাজ শেষ করে পরীক্ষামূলক রেলইঞ্জিন চালিয়েছে। বাংলাদেশ অংশে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে পরীক্ষামূলক রেল চলানো হবে।

চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর র্পূতি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী এ পথে ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। করোনা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সেটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।

নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশন মাস্টার মো. মোমিন উদ্দিন প্রামানিক ভারতীয় অংশে রেলইঞ্জিন চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এতে বন্ধু প্রতিম দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় ও গতিশীল হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply