কাজ শেষের আগেই ভেঙ্গে পড়ল গার্ডার ব্রিজ

|

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

কুয়াকাটা পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের দোভাষীপাড়ায় নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই রোববার (২৭ জুন) সকালে ভেঙ্গে পড়ল নির্মাণাধীন গার্ডার ব্রিজ। দুর্ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে নির্মাণ শ্রমিকরা।

কুয়াকাটা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মিজানুজ্জামান জানান, ২৮দিন আগে ব্রিজের স্লাবটির ঢালাই দেয়া হয়। রবিবার সকালে সেটির সেন্টারিং খুলছিল ঠিকাদারের লোকজন। খোলার পরই ব্রিজটি ধসে পড়ে।

তিনি জানান, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ২০ মিটার দীর্ঘ ও ৫.৫ মিটার প্রস্থের এই ব্রিজটির টেন্ডার দেয়া হয়। ২ কোটি ২৬ লাখ ১৫ হাজার ৮শ ৮৩ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি’র) অর্থায়নে কুয়াকাটা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় পৌরসভার দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি চলমান রয়েছে। সেতুর প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ পর্যায়ে ছিল। আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ব্রিজের কাজ শেষ হবার কথা ছিলো। ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান দ্বীপ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজের তদারকি করছিলো।

স্থানীয়রা জানায়, সেতুর স্থানে আগে একটি আয়রন সেতু ছিল। আগের সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় সেখানে গার্ডার ব্রীজের নির্মাণ কাজ চলছিল। দুই পাশের গার্ডার এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নির্মাণ না হওয়ায় ব্রিজটি ধসে পড়তে পারে বলে স্থানীয়দের ধারনা। অভিযোগ রয়েছে, কাগজ কলমে এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সৈয়দ মোঃ সোহেল অ্যান্ড দীপ এন্টারপ্রাইজের নাম থাকলেও তারা মামুন নামে এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দেয় এ কাজটি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটির নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী, সিমেন্ট কম ব্যবহারসহ ওয়ার্ক
অর্ডার অনুযায়ী কাজ না করার কারণে এমনটি হয়েছে। নির্মাণ কাজ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়রা উপজেলা প্রকৌশলী ও পৌর মেয়রের কাছে অভিযোগ করে আসলেও তারা এতে কর্ণপাত করেনি।

দোভাষীপাড়ার বাসিন্দা আবদুল হালিম মিয়া জানান, সেতুটির মাঝখানে কোন পিলার নাই। দুটি গার্ডারের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, তাই এটি ভেঙ্গে পড়েছে। এই সেতু দিয়ে মিশ্রিপাড়া, লতাচাপলী, ধুলাসারসহ পায়রা বন্দরে যাতায়াত করে থাকে স্থানীয়রা। দোভাষীপাড়া মাদ্রাসা ও মুসুল্লীয়াবাদ ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও এখান দিয়ে চলাচল করে। সেতুটি ভেঙ্গে পড়ায় এখন এসব মানুষদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র মোঃ আনোয়ার হাওলাদার জানান, কি কারণে সেতুটি ভেঙ্গে পরেছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্তে কাজে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া ঘটনার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন না থাকায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মামলার প্রস্ততি চলছে বলেও তিনি জানান।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply