সিআরবি এলাকায় শতবর্ষী গাছ কাটার সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামবাসীর ক্ষোভ

|

সিআরবি এলাকায় শতবর্ষী গাছ কাটার সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামবাসীর মাঝে দানা বেঁধেছে ক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং বা সিআরবি এলাকায় শতবর্ষী সব গাছ কেটে বেসরকারি হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামবাসীর মাঝে দানা বেঁধেছে ক্ষোভ। নগরীজুড়ে বইছে প্রতিবাদের ঝড়। প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংসের শঙ্কায় বিবৃতি দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। আইনি নোটিশ দিচ্ছে বেলা। তবে সিদ্ধান্তে অনড় রেল কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি কোম্পানিকে জমি লিজ প্রদান, চুক্তি ও অনুমোদনসহ সব প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শেষ।

চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিআরবি এলাকায় এমন শতাধিক গাছ আছে যেগুলোর বয়স একশ’ বছর। দেড়শ’ বছর বয়সী গাছও আছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক। পূর্বাঞ্চল রেলের প্রধান কার্যালয়ের চারপাশে ছোট-বড় পাহাড় টিলায় রয়েছে এমন অন্তত আরও শতাধিক শতবর্ষী গাছ।

সবুজে ঘেরা, নৈসর্গিক সৌন্দর্যমণ্ডিত সিআরবি চত্ত্বর এলাকায় এমন প্রাচীন সব গাছ কেটে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষুব্ধ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি বেলার সমন্বয়ক আলীউর রহমান গাছ কেটে এই হাসপাতাল প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিবাদ করে বলেছেন, সিআরবির যে নান্দনিকতা তা ধ্বংস হয়ে যাবে। চট্টগ্রামবাসী হিসেবে আমরা তা কখনই হতে দিবোনা। এরইমাঝে আমরা আইনী প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করেছি।

চট্টগ্রামের পিপলস ভয়েসের সভাপতি শরীফ চৌহান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, চট্টগ্রামের মানুষের প্রাকৃতিক যে অধিকার তা ভোগ করার সুযোগ দিন।

চট্টগ্রামে মুক্ত বাতাসে বুকভরে নিঃশ্বাস নেয়ার মতো স্থান খুব কম। তার উপর সিআরবিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে সাংস্কৃতিক বলয়। এমন স্থান ধ্বংসের বিপক্ষে সংস্কৃতি কর্মীরা।

বিশিষ্ট শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী রাশেদ হাসান বলেন, এ স্থানে গাছ কেটে অবকাঠামো নির্মিত হলে চট্টগ্রামের শেষ যে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সেটিও ধ্বংস হয়ে যাবে।

বন্দরনগরীর ফুসফুস হিসেবে খ্যাত সিআরবিতে শতবর্ষী গাছ কেটে হাসপাতাল নির্মাণ হঠকারি সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনরা। হাসপাতালের জন্য প্রস্তাবিত স্থানে গাছ লাগিয়ে চলছে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ।

তবে রেলওয়ে কতৃর্পক্ষের ব্যাখ্যা ভিন্ন। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই প্রকল্পের জন্য কিছু ছোট গাছ কাটা পড়বে। আর পাশের যে গাছগুলো আছে সেগুলো আইন অনুযায়ী কাটা হবে। চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতাল নির্মাণের আগে ডেভেলপমেন্ট ফি হিসেবে এককালীন ৮ কোটি টাকা এবং চালুর পর প্রতিবছর ১ কোটি টাকা করে রেলওয়েকে দেবে ইউনাইটেড গ্রুপ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply