সাতক্ষীরার ফোর মার্ডার মামলার আসামি রায়হানের ফাঁসি

|

শাহীনুর রহমান. ভাবী সাবিনা খাতুন, তাদের ছেলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সিয়াম হোসেন মাহী ও মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাসমিন সুলতানাকে কোমল পানীয়ের সাথে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায় রায়হান। এরপর তাদের কুপিয়ে হত্যা করে সে।

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চানজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত চাঞ্চল্যকর মামলার একমাত্র আসামি রায়হানুরকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা ৪৫ মিনিটে সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

এদিকে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর, পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় একমাত্র আসামি রায়হানুর রহমানের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।

আসামি পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী এস এম হায়দার আসামিকে বেকসুর খালাস দাবি করেছিলেন।

তবে সাতক্ষীরা বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো হত্যা মামলায় মাত্র ২০ কার্যদিবসে রায় ঘোষিত হল।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের রায়হানুর রহমান (৩৬) বেকারত্বের কারণে বড়ভাই শাহীনুরের সংসারে খাওয়া দাওয়া করতো। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোনো কাজ না করায় গত বছরের ১০ জানুয়ারি তার স্ত্রী তালাক দেয় রায়হানুর রহমানকে। সংসারে টাকা দিতে না পারায় শাহীনুরের স্ত্রী দেবর রায়হানুরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতো। এরই জের ধরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই শাহীনুর রহমান (৪০), ভাবী সাবিনা খাতুন (৩০), তাদের ছেলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে, দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাসমিন সুলতানাকে (৮) কোমল পানীয়ের সাথে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায় রায়হান। এরপর ভোর চারটার দিকে হাত ও পা বেঁধে তাদেরকে একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এসময় তাদের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে তাকে লাশের পাশে ফেলে রেখে যায়।

এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদি হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে নেমে সিআইডি সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে শাহীনুরের ভাই রায়হানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেফতার করে। পরে রায়হানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মণ্ডলের কাছে রায়হানুর নিজেই হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।

নিহত পরিবারে বেঁচে থাকা একমাত্র শিশু মারিয়া বর্তমানে হেলাতলা ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুনের কাছে বড় হচ্ছে। গত ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম আসামি রায়হানুর রহমানের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় গত ১৪ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply