বিশ্বব্যাপী স্পষ্ট হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

|

ছবি: সংগৃহীত

বিরূপ আবহাওয়ায় বিপর্যস্ত এশিয়া থেকে ইউরোপ। তীব্র দাবদাহ-দাবানলে বিপর্যস্ত কোনো দেশ, কোনোটিতে আবার প্রলয়ংকারী বন্যার তাণ্ডব। প্রকৃতির এমন বৈরী আচরণে উদ্বিগ্ন, গবেষকরা। আশঙ্কা- বিশ্বব্যাপী স্পষ্ট হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব।

ইয়েলোস্টোন নদীর স্মরণকালের সর্বোচ্চ তাণ্ডব দেখছেn যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দারা। ঘরবাড়ি-স্থাপনা, সড়ক ভেঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে খরস্রোতা নদীটির পানি। সামনে আরও ভয়াবহতার পূর্বাভাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সেখানকার জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা কর্মকর্তা ড্যান ক্রিসওয়েল বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বরফ গলছে। সামনের দিনগুলোতে আরও গরম পড়তে পারে। তাই ভয়াবহতা এখনও পুরোপুরি কাটেনি। আমাদের প্রথম দায়িত্ব মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

অন্যদিকে, ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়েছে অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া ও ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে। শুষ্ক বাতাস, প্রচণ্ড তাপে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আগুন। প্রাণহানি এড়াতে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।

গেল ৪ দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ গরমে ধুঁকছে স্পেনবাসী। দাবানল ছড়িয়েছে কাতালোনিয়া প্রদেশে। এ দুর্যোগে মানুষের নানা শারীরিক জটিলতার পাশাপাশি পশু-পাখিদের জীবন নিয়েও শঙ্কা জানিয়েছেন গবেষকরা। গরমে নাকাল ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ।

ভিন্ন চিত্র ল্যাটিন দেশ পেরুতে, তীব্র শীতে কাঁপছেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাপমাত্রা পৌঁছেছে মাইনাস ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে- যা চলতি বছরের সর্বনিম্ন। দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির প্রশাসন।

পেরুর একজন কৃষক, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গবাদি পশুপাখিগুলো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ওদের এখন চার ঘণ্টার দূরত্বে রেখে এসেছি আমরা। সরকারের থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতা পাচ্ছি না।

প্রকৃতির বৈরীতায় বিপর্যস্ত এশিয়াও। টানা বৃষ্টিপাতে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কবলে চীনের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি প্রদেশ। বাস্তুচ্যুত কয়েক লাখ বাসিন্দা; হয়েছে প্রাণহানিও।

তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস পরিস্থিতি ভারত-পাকিস্তানের বেশ কিছু অঞ্চলের বাসিন্দাদের। হাসপাতালগুলোতে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে পানিশূণ্যতা ও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

ভারতীয় চিকিৎসক শিব প্রসাদ গুপ্তা বলেন, প্রতিদিন হাসপাতালে আসা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ রোগীই পানিশূণ্যতাজনিত রোগে আক্রান্ত। এই গরমে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

প্রকৃতির বিরূপ আচরণ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। পরিবেশ বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল সন বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনরোধে এখনই উদ্যোগী না হলে, সামনের দিনগুলোতে এর ভয়াবহতা আরও বাড়বে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply