নরসিংদীতে সাবেক ইউপি মেম্বারকে কুপিয়ে হত্যা, চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

|

হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টু।

স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী:

নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুরে সুজিত সূত্রধর নামে সাবেক এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। শুক্রবার (২৪ জুন) বিকেলে নিহতের ছেলে সুজন সূত্রধরের দেয়া লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে রুজু হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ তালুকদার।

এর আগে গত বুধবার রাতে হাজীপুর ইউনিয়নের বেঙ্গল এলাকার কাঠবাজারে সুজিত সূত্রধরকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। তিনি হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান ছিলেন। হাজীপুরের বেঙ্গল এলাকার কাঠবাজারে কাঠ ও ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন সুজিত। সুজিতকে হত্যার জন্য হামলার ঘটনায় তার ছেলে সুজন সূত্রধর ও দোকানের কর্মচারী দ্বীন ইসলামও আহত হন।

মামলার ১৬ আসামি হলেন, হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফ খান পিন্টু (৫৫), তার ছোট ভাই মনিরুজ্জামান খান (৪৫), স্থানীয় ইউপি সদস্য বদর উদ্দিন সরকার (৬০), কাওসার মাহবুব (৩৫), ফেরদৌস সালাউদ্দিন (৩৫), তৌহিদ আক্রাম (৩০), তানভীর সরকার (৩০), রাকিব সরকার (৩২), মামুন মোল্লা (৩৮), দেলোয়ার হোসেন (৩২), তারেক মিয়া (২৫), আকবর মিয়া (২৫), আজমল সরকার (৫০), মো. মাসুম (২৬), শিমুল মাহমুদ (২২) ও সোহাগ মিয়া (২৩)। এছাড়াও মামলায় আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার বলা হয়েছে, উল্লিখিত প্রথম ৬ আসামির বিরুদ্ধে জমি ও অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধের কারণে একাধিক মামলা করেছিলেন সুজিত সূত্রধর। তাদের বিরুদ্ধে এসব মামলা করায় আসামিরা বিভিন্ন সময় সুজিতকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। গত ২২ জুন বুধবার রাত ৮টার দিকে হাজীপুরের কাঠবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাবা-ছেলে সুজিত ও সুজন অবস্থান করছিলেন। ওই সময় প্রথম ৬ আসামির উপস্থিতিতে ও নির্দেশে বাকি আসামিরা হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। ওই সময় তারা বাবা-ছেলেকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকেন।

পরে ৭ থেকে ১৬ নম্বর আসামিরা তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুজিতকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে ছেলে সুজন সূত্রধরকে হত্যার জন্য আক্রমণ করা হলে তিনি ডাক-চিৎকার শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে পরিবারের সকলের প্রাণনাশ, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা।

মামলার বাদী ও নিহতের ছেলে সুজন সূত্রধর জানান, অবশেষে আমাদের দেওয়া লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিয়েছে পুলিশ। আমার চোখের সামনে বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। যাদের হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে দেখেছি, শুধু তাদেরই মামলায় আসামি করা হয়েছে। এখন আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

জানতে চাইলে নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ তালুকদার জানান, বাদীর দেয়া লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানালেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply