চরমপন্থায় মদদ দেয়া রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সংগঠন: জেলেনস্কি

|

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সংগঠন; তারা চরমপন্থায় মদদ দেয়। সোমবার (২৭ জুন) ভার্চুয়ালি জি সেভেন সম্মেলনে যোগ দিয়ে এ অভিযোগ তুলেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভোলদিমের জেলেনস্কি। একইদিন জার্মান চ্যান্সেলর বলেছেন, যুদ্ধের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে রাশিয়া; যার নিরাময় সহজে অসম্ভব। অবশ্য, বিশ্লেষকদের অভিমত, পরাশক্তিগুলোর এ সম্মেলন পুরোটাই সাজানো নাটক; বড় বড় বুলি আউড়ালেও আসবে না ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান।

দফায়-দফায় মিসাইল হামলায় ভগ্নস্তুপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ। সোমবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো খারকিভের একটি প্লে গ্রাউন্ডও। মাল্টিপল লন্ঞ্চার থেকে ছোঁড়া রকেটের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ কোমলমতি; আহত হয়েছে শিশুসহ কমপক্ষে ২৬ জন।

যুদ্ধ যখন ইউক্রেন কোণঠাসা, সে সময় জি সেভেন সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তার জোরালো অভিযোগ, রাশিয়া কোনো রাষ্ট্র নয় বরং গোটা একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সংগঠন, তারা চরমপন্থায় মদদ দেয়। আর, এটাই সত্যি। দেশটি থেকে জ্বালানি ক্রয়-সরবরাহ এবং রুশ ব্যাংকগুলোর সাথে লেনদেন করার মানে সন্ত্রাসীদের পরোক্ষভাবে ইন্ধন দেয়া। গেলো চার মাসে, ইউক্রেন ভূখণ্ডে অন্তত ৩ হাজার ক্রুজ মিসাইল ছুঁড়েছে রুশ সেনাবহর। গোলাবারুদ আর গ্রেনেডের সংখ্যা তো অগণিত। এটি সন্ত্রাসবাদ নয়তো, আর কী?

সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ জার্মানির দাবি, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে গভীর ফাটল সৃষ্টি করেছে রাশিয়া। যা যুদ্ধ শেষেও ফিরবে না স্বাভাবিক অবস্থায়। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে এই যুদ্ধ। ইউক্রেনে হামলা চালানোর মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা, নীতিমালা ও চুক্তি ভঙ্গ করেছে রাশিয়া। সুতরাং, মস্কোর সাথে সহসা সম্পর্ক স্বাভাবিকের কোনো সম্ভাবনা নেই। এমনকি, যুদ্ধ শেষ হলেও আগের পরিস্থিতিতে ফেরাটা কঠিন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ থামানোর এজেন্ডা নিয়ে চলমান সম্মেলনগুলো রীতিমতো বিশ্বনেতাদের সাজানো নাটক। ঘুরেফিরে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। ব্রুকিং ইন্সস্টিটিউশনের বিশ্লেষক ডোগ রেডিকার বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন যদি এখনও ভাবেন, ইউক্রেনের হয়ে লড়াই করছে ইউরোপ-আমেরিকা; তাহলে সেটা বড় ভুল। কারণ, জি সেভেন সম্মেলনে স্পষ্টভাবে তারা জানিয়েছে যে, দীর্ঘায়িত হবে যুদ্ধ। স্বর্ণের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল সবচেয়ে হাস্যকর বিষয়। তবে, জ্বালানির ওপর কড়াকড়িতে সবচেয়ে চতুরতার পরিচয় দিয়েছে পশ্চিমারা। কোনো দেশকে তেল-গ্যাস বিক্রি করতে না পেরে দাম কমাতে বাধ্য হবে মস্কো।

রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপেও সম্মত হয়েছে জি সেভেন। খুব শিগগিরই শিল্পখাতের কাঁচামাল, পরিসেবা, প্রযুক্তি খাত এবং স্বর্ণ ব্যবসা থেকে রাশিয়া যে রাজস্ব আদায় করে, সেগুলোর ওপর বাড়বে কড়াকড়ি।

আরও পড়ুন: ন্যাটো সেনা ৪০ হাজার থেকে বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৩ লাখ

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply