রংপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৮

|

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর:

জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মামলার হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে প্রতিপক্ষের ছোরা, বল্লম ও চাপাতির হামলায় ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদেরকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় রংপুর থেকে মামলার হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কুতুব এলাকায় পৌঁছালে তাদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।

রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন জানান, উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের কিসামত কুতুব এলাকার মশিয়ার রহমান ও আলতানুর রহমান সাগর পরিবারের সাথে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলছিল। বুধবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় রংপুর থেকে মামলার হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আব্দুল হামিদের লোকজন। এ সময় কুতুব এলাকায় মফিজার রহমানের বাড়ির সামনে তাদের ওপর ছোরা, বল্লম, তীর ধনুক, চাপাতি, বটি, বেকি দিয়ে হামলা চালায় সাগরের লোকজন। তারা সুরুজ (৪৪), মহসিন (৪৫), আনারুল হক (৬০), মইনুল (৫১), সুজন (৩৬), মোস্তাফিজার (৪২), ফারাজ (৩৮) ও মশিয়ারকর (৫৫) এলোপাথাড়ি কোপায়। এতে কারো কব্জি, কারো আঙ্গুল, কারো কনুইসহ হাত বিচ্ছিন্ন হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে সুজন ও আনারুলের ডান হাতের কব্জি, মইনুলের বৃদ্ধাঙ্গুলি, সুরুজের বুকে কোপানোয় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাদের অবস্থা আশংকাজনক।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মশিয়ার রহমান বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যেই হামলাকারীদের একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।

আহত মশিয়ার রহমান জানান, হাজিরা দিয়ে যাওয়ার পথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মেহেদী হাসান শাফি (৩৩), আইয়ুব আলী (৪০), লাদেন (৩০), সাগর (২৪), ছোটন (২৬), গাজিউর রহমান (৪৫), জলিল (৪৮), আশরাফ (৫২), লালমিয়াসহ (৩২) ১৫/২০ জন আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে এলোপাথাড়ি কোপায়। আমরা এখন মৃত্যু শয্যায়। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের সাথে জড়িত হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন নেয় না। আমাদের একসাথে মেরে ফেলার জন্যই এই হামলা হয়েছে। আমরা হামলাকারীদের ফাঁসি চাই।

আহত আনারুলের স্ত্রী কিসামত কুতুব উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাহিয়ারা বেগম জানান, আমি একজন শিক্ষক। এভাবে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার পরিবারের ৮ জন লোককে মেরে ফেলার জন্য কোপানো হলো। অথচ পুলিশ এখন পর্যন্ত সেভাবে কোনো ব্যবস্থা নিলো না। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার পরিবারের লোকজনের জীবনরক্ষার দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় রাধারাণি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরে আলম সিদ্দিকী সাজু জানান, এভাবে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিরীহ সাধারণ মানুষকে হত্যার উদ্দেশে কোপানোর বিষয়টিতে আমরা হতবাক হয়েছি। দীর্ঘ ৩৫ বছরে এ ধরনের ঘটনা আমরা দেখিনি। নিভৃত পল্লীতে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply