লুলা কি ফিরছেন ব্রাজিলের ক্ষমতায়?

|

জেইর বোলসোনারো ও লুলা ডি সিলভা।

ব্রাজিলের রাজনীতিতে দারুণ প্রত্যাবর্তন ঘটলো লুলা ডি সিলভার। বামপন্থি নেতার আগমনে পাল্টে যেতে পারে লাতিন আমেরিকান দেশটির আর্থ-সামাজিক দৃশ্যপট। যার স্পষ্ট প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও। অন্যদিকে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো সমর্থন যোগাচ্ছেন ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্রকে। এমনকি, সমাজের নিচু শ্রেণীকে টেনে তোলার ব্যাপারেও তার কোনো আগ্রহ নেই বলে জানা গেছে। খবর আলজাজিরার।

তিন বছর আগেও তিনি ছিলেন কারাগারে। ‘অপারেশন কারওয়াশ’ মামলায় তাকে শোনানো হয় ২৫ বছরের সাজা। সে সময়, অনেকেই ভেবেছিলেন- রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ লুলা ডি সিলভার। তবে, গেলো বছর মার্চেই নির্দোষ সাব্যস্ত হন ৭৬ বছরের বামপন্থি এ নেতা। তিনিই হতে যাচ্ছেন ব্রাজিলের নতুন প্রেসিডেন্ট।

মূলত, দরিদ্র শ্রেণীর জীবনমান উন্নয়নে শুধু প্রতিশ্রুতিই দেন না লুলা ডি সিলভা। তার শাসনামলে ‘বলসা ফ্যামিলিয়া’ বা ‘ফমি জিরো’র মতো বেশকিছু সাড়া জাগানো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছিলেন। যার বদৌলতে রাতারাতি শিক্ষার হার বেড়েছিলো ব্রাজিলে। ব্রাজিলে কমে যায় শিশুশ্রম, প্রাথমিক স্বাস্থ্যেরও হয় উন্নতি। সুদিন ফেরৎ পেতেই, লুলাকে ব্রাজিলের ক্ষমতায় দেখতে চান ব্রাজিলবাসী।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী লুলা ডি সিলভা বলেন, আমি রাস্তায় নামতে ভালোবাসি। আমি রাস্তায় নেমে ব্রাজিলিয়ানদের সাথে কথা বলতে চাই। জানতে চাই তাদের সমস্যা, পেতে চাই সমাধান ও পরামর্শ। ব্রাজিলিয়ানদের জন্য এটাই তাদের প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। তিনি দেশবাসীকে সত্য নাকি মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছেন-সেটিও তাদের জানা দরকার বলে আমি মনে করি।

অন্যদিকে, কট্টরপন্থি জেইর বোলসোনারোর নীতিমালা শুধু সমাজের উচ্চ শ্রেণীর স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট। তার বির্তকিত উদ্যোগের কারণে ১০ ভাগ ব্রাজিলীয়র হাতে ৯০ ভাগ সম্পদ। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও তার ভূমিকা বেশ প্রশ্নবিদ্ধ।

এ প্রসঙ্গে ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো বলেন, জনগণের ভাগ্য বদলের জন্যই নির্বাচন হয়। তবে, কিছু-কিছু পরিবর্তন দেশকে খারাপের দিকেও নিয়ে যায়। মহামারির দুই বছর ব্রাজিলকে সামলেছে আমার সরকার। নিশ্চিত করেছে বিপুল সংখ্যক ভ্যাকসিন। অর্থনৈতিক টানাপোড়েন থেকে দেশের উত্তরণ ঘটছে। এখন, সাজানো-গোছানো ব্রাজিলের হাল ধরতে চাইছে অন্য কেউ!

চীন-রাশিয়া-ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার জোট- ব্রিকসে রয়েছে ব্রাজিলের নাম। যারা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর ব্যাপারে বরাবরই রাশিয়ার মিত্র চীন। মধ্যমপন্থা অবলম্বন করছে বাকি দু’দেশ। সেক্ষেত্রে, যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র ভরসার স্থান জেইর বোলসোনারো। কিন্তু, সে জায়গায় লুলা ডি সিলভা ক্ষমতা এলে; তিনি হবেন ওয়াশিংটনের নতুন মাথাব্যাথা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply