এত রক্তক্ষয়েও অবস্থান বদলায়নি ইরান

|

তিন সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনেও মাহশা আমিনির মৃত্যু ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করেনি ইরান। শুক্রবার (৭ অক্টোবর) নতুন মেডিকেল রিপোর্টেও দাবি করা হয়, নির্যাতনে নয় বরং অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে এ কুর্দি নারীর। আন্দোলনকে শত্রুদের ষড়যন্ত্র বলছে তারা। এদিকে, পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে এখনও উত্তাল ইরান। নিজেদের চুল কেটে বিক্ষোভে সংহতি জানাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ।

আলোচিত মাহশা আমিনির মৃত্যুতে তিন সপ্তাহ ধরে ইরানে চলছে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন। দিন যত গড়াচ্ছে, ততই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভ। হিজাব ইস্যুতে চলমান আন্দোলনে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে শতাধিক আন্দোলনকারীর। বিক্ষোভের উত্তাপ ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বেই। সংহতি জানিয়েছে বহু দেশ।

রাজপথে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। দেশে দেশে নিজেদের চুল কেটে চলছে প্রতিবাদ, প্রতিবাদ জানাচ্ছেন নানা পেশার সেলিব্রেটিরাও। বেলজিয়াম, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন পার্লামেন্টেও চুল কেটে সংহতি জানানো হচ্ছে আন্দোলনকারীদের প্রতি।

বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা আন্দোলনেও ২২ বছর বয়সী এ কুর্দি তরুণীর মৃত্যু ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান বদলায়নি ইরান। শুক্রবার নতুন মেডিকেল রিপোর্টেও বলা হয়েছে, অসুস্থতায় মৃত্যু হয় আমিনির। রিপোর্টে অস্বীকার করা হয় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগও।

আন্দোলনকারীদের প্রতিও অনমনীয় ইরান সরকার। বিক্ষোভ দমনে রইসি প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের নড়চড় হয়নি এ তিন সপ্তাহেও। বরং শত্রুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে দেশটি।

মাহশা আমিনি কুর্দি জাতিগোষ্ঠীর, ইরানের কুর্দি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বিক্ষোভ হচ্ছে বেশি। এ কারণে আন্দোলনের পেছনে কুর্দিদের ষড়যন্ত্র দেখছে ইরান। দাবি করছে, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের ইন্ধনে হচ্ছে এ ষড়যন্ত্র। আর তাই ইরাকে কুর্দি নেতাদের স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলাও চালিয়েছে তারা।

সম্প্রতি হিজাব দিয়ে পুরো মাথা না ঢাকার অপরাধে আটকের পর, পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় মাহশা আমিনির। পরিবার নির্যাতনের অভিযোগ তুললেও প্রথম থেকেই পুলিশের দাবি, অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যু হয় এ তরুণীর। আমিনির মৃত্যুর পরই নারী স্বাধীনতার দাবিতে ইরানের বিভিন্ন শহরে আন্দোলনে নামে হাজার হাজার মানুষ।

১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই ইরানে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। আর এই আইন কঠোর ভাবে মেনে চলতে বাধ্য করে মোরাল পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারপন্থী দলগুলো এই আইন পরিবর্তনের দাবি জানালেও কট্টরপন্থীদের আপত্তির কারণে সম্ভব হয়নি।

/এডিব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply