ফটোসাংবাদিক আফতাব হত্যায় ৫ আসামির ফাঁসির রায় বহাল

|

একুশে পদকপ্রাপ্ত ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির ফাঁসি ও এক আসামির সাত বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজনরা।

বুধবার (১২ অক্টোবর) সকালে হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন আসামিদের আইনজীবী।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, প্রথিতযশা এই সাংবাদিক বাসায় একা থাকতেন। তার ড্রাইভার এবং কতিপয় ভাড়াটিয়া মিলে তাকে নির্মমভাবে খুন করে। খুনিরা একটি সাদা টাওয়েল দিয়ে তার গলা ও হাত পা চেপে ধরে হত্যা করে। পরবর্তীতে আফতাব আহমেদের কন্যা একটি এফআইআর করেন। এর প্রেক্ষিতে তদন্ত হয়। এফআইআরে কোনো নাম দেয়া ছিল না। তবে তদন্তে নাম বেরিয়ে আসে। তিনজন খুনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় যে, তারা খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা হত্যার বিশদ বিবরণ দেয়। সেই বিবরণ অনুসারে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামতগুলোও উদ্ধার করা হয়। এবং ট্রায়াল কোর্ট সবকিছু বিবেচনা করে তাদের ফাঁসি দেয়। আসামিপক্ষ আগে বলেছিল যে, চাক্ষুস সাক্ষী নেই। আমরা বলেছিলাম, চাক্ষুস সাক্ষীর প্রয়োজন নেই। যেহেতু, তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আছে এবং, তার সাথে উদ্ধারকৃত আলামত এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সাদা টাওয়েল পুরোপুরি মিলে গেছে।

আফতাব আহমেদের মেয়ে আফরোজ আহমেদ বন্যা রায়ের পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে, রায়টা আমরা পেলাম। এতদিন পরে রায় হলেও আমি আদালতের উপর সন্তুষ্ট। আমার বাবার হত্যার বিচারে হাইকোর্ট যে রায় দিলো তা যেন ভবিষ্যতেও বহাল থাকে এবং কার্যকর হয় সেই কামনাই করছি। বাবার আত্মা যেন শান্তি পায়, সেই কামনা করছি। বাবার সহকর্মীরা, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাই।

২০১৭ সালের ২৮ মার্চ সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি হলেন, বিল্লাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, রাজু মুন্সি, রাসেল এবং আফতাব আহমেদের গাড়িচালক হুমায়ুন কবির মোল্লা। রায়ে অন্য আসামি সবুজ খানকে সাত বছর কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। আসামিদের মধ্যে রাজু মুন্সি ও রাসেল পলাতক।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার ওয়াপদা রোডে ৬৩ নম্বরের নিজ বাসায় খুন হন ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদ। আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে তিনি একুশে পদক পান।

/এম ই



সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply