অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন নওয়াজুদ্দিন

|

কয়েক মাস ধরেই আলিয়া সিদ্দিকী ও নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীর দাম্পত্য কাজিয়া নিয়ে নানা ধরনের খবর হয়েছে। আলিয়া অভিযোগ করেন, নওয়াজ তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন। এমনকি অভিনেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগও করেছেন তিনি। তবে নওয়াজুদ্দিনের বিরুদ্ধে আলিয়া একের পর এক অভিযোগ করলেও অভিনেতা ছিলেন চুপ। অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন নওয়াজ।

সোমবার (৬ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ইনস্টাগ্রাম পেজে এক দীর্ঘ পোস্টে নিজের অবস্থান খোলাসা করেন এই অভিনেতা।

পোস্টের শুরুতে নওয়াজ বলেন, আমার নীরবতার জন্য আমাকে সবাই খারাপ লোক ভাবছে। আমি যে কারণে চুপ করে আছি তা হলো, এই সমস্ত তামাশায় কোথাও না কোথাও আমার ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পড়বে। কিছু একতরফা, জোর করে বানানো ভিডিও নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, প্রেস এবং একদল লোক আমার চরিত্রহননকে উপভোগ করছে। কিছু বিষয় আছে, আমি প্রকাশ করতে চাই- প্রথমত, আমি এবং আলিয়া বেশ কয়েক বছর ধরে একসঙ্গে থাকি না, ইতোমধ্যে আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে কিন্তু আমরা অবশ্যই আমাদের বাচ্চাদের জন্য বোঝাপড়া করে চলছি। কেউ কি জানে, আমার ছেলে-মেয়েরা ভারতে কেন রয়েছে? কেন তারা ৪৫ দিন স্কুলে যায় না? স্কুল থেকে ক্রমাগত আমাকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে, জানতে চাওয়া হচ্ছে যে, কেন তারা স্কুলে যাচ্ছে না? আমার বাচ্চাদের গত ৪৫ দিন ধরে ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছে এবং দুবাইয়ে তাদের স্কুলে পাঠানো হচ্ছে না।

স্ত্রী আলিয়ার আর্থিক সাহায্যের কথা বলতে গিয়ে নওয়াজ বলেন, গত চার মাস ধরে দুবাইয়ে সন্তানদের ফেলে রেখে এসেছে শুধুমাত্র আমার থেকে টাকা দাবি করার জন্য। স্কুলের ফি, চিকিৎসা, ভ্রমণ এবং অন্যান্য অবসরের কাজ বাদ দিয়ে দুবাইয়ে আমার সন্তানদের সঙ্গে যাওয়ার আগে গত ২ বছর ধরে তাকে গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ১০ লাখ রুপি এবং সন্তানদের নিয়ে দুবাই যাওয়ার আগে প্রতি মাসে ৫-৭ লক্ষ রুপি দেয়া হয়েছে। আমি তার ৩টি ছবির জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করেছি, যাতে তিনি নিজের আয় বাড়াতে পারেন, কারণ তিনি আমার সন্তানদের মা। আমার বাচ্চাদের জন্য তাকে বিলাসবহুল গাড়ি দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি সেগুলো বিক্রি করে নিজের জন্য খরচ করেছিলেন। আমি আমার সন্তানদের জন্য মুম্বাইয়ের ভারসোভাতে একটি বিলাসবহুল সমুদ্রমুখী অ্যাপার্টমেন্টও কিনেছি। আমার বাচ্চারা ছোট বলে আলিয়াকে ওই অ্যাপার্টমেন্টের সহ-মালিক করা হয়েছিল। আমি আমার সন্তানদের দুবাইতে একটি ভাড়া অ্যাপার্টমেন্ট দিয়েছি, যেখানে সেও আরামে থাকতো। তিনি শুধু আরও টাকা চান এবং তাই আমার এবং আমার মায়ের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দায়ের করেছেন এবং এটি তার অভ্যাস। তিনি অতীতেও একই কাজ করেছেন এবং যখন তার চাহিদা অনুযায়ী অর্থ প্রদান করা হয় তখন মামলা প্রত্যাহার করে নেন।

বাড়িতে প্রবেশাধিকার না পাওয়ার প্রসঙ্গে নওয়াজ বলেন, ছুটির সময় যখনই আমার ছেলেমেয়েরা ভারতে আসতো, তারা শুধু ঠাকুমার কাছেই থাকতো। কীভাবে কেউ তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারে? সেই সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। কেন সে বের করে দেয়ার ভিডিও বানালো না, যেখানে সে সব এলোমেলো জিনিসের ভিডিও বানাচ্ছে। তিনি এই নাটকে বাচ্চাদের টেনে এনেছেন এবং তিনি কেবল আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে, আমার সুনাম নষ্ট করতে, আমার ক্যারিয়ার নষ্ট করতে এবং তার অবৈধ দাবিগুলি পূরণ করতে এই সব করছেন।

নওয়াজউদ্দিনের দাবি, কোনো বাবা-মা চাইবেন না তাদের সন্তান পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হোক বা তাদের ভবিষ্যৎ ব্যাহত হোক। আজ আমি যা উপার্জন করছি, তা আমার দুই সন্তানের জন্যই এবং কোনো মানুষই এটা পরিবর্তন করতে পারবে না। আমি শোরা ও ইয়ানিকে ভালোবাসি এবং তাদের মঙ্গল ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতে আমি যেকোনো মাত্রায় যাবো। আমি এ পর্যন্ত সব মামলা জিতেছি এবং বিচার বিভাগের ওপর আস্থা রেখে যাবো। প্রেম কাউকে আটকে রাখার জন্য নয়, বরং একজনকে সঠিক দিকে উড়তে দেয়ার জন্য।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply