শান্তিচুক্তির পর দীর্ঘ সংঘাত অবসানের আশা মোরো মুসলিমদের

|

মোরো বিদ্রোহী। ফাইল ছবি।

ফিলিপাইনের মিন্দানাওয়ে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার পেতে চলেছেন মোরো মুসলিমরা। পাঁচ দশকের সশস্ত্র বিদ্রোহের পর দুতের্তে সরকারের সাথে শান্তি চুক্তির ফলে আশায় বুক বাঁধছেন অঞ্চলটির অর্ধ কোটি বাসিন্দা। জুলাই মাসে কংগ্রেসে বিলটি পাসের পর, সোমবার ‘বাংসামোরো’ আইনে চূড়ান্ত অনুমোদন দেন প্রেসিডেন্ট দুতের্তে।

ফিলিপাইন সরকার ও মোরো বিদ্রোহীদের মধ্যে ঐতিহাসিক ‘বাংসামোরো অর্গ্যানিক ল’ চুক্তি স্বাক্ষরের পর এখন শান্তির জীবনে ফিরতে চায় মিন্দানাওয়ের ৫০ লাখ মানুষ। অর্ধশতকের অস্থিরতার অবসান ঘটিয়ে, বাংসামোরোর মুসলিমদের স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরির সুযোগ করে দেবে এ চুক্তি আশা দেশটির প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তের।

তিনি বলেন, মিন্দানাওয়ে সুশাসন, শান্তি আর স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার সময় চলে এসেছে। মোরো মুসলিম আর ফিলিপাইন সরকারের মধ্যকার সব বৈরিতা দূর করে উন্নয়নের লক্ষ্যে হাত মিলিয়ে কাজ করবো আমরা। এক জাতি হয়ে, পুরো ফিলিপাইনের সার্বভৌমত্বের প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল থেকে বাংসামোরোকে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ মিন্দানাওয়ে, মোরোদের আদিবাস কয়েকশ’ বছরের। ষাটের দশকে, ফিলিপাইন থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে শুরু করে সশস্ত্র আন্দোলন। এরপর গেল ৫০ বছরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ। আশ্রয়হীন আরও ২০ লাখ। দীর্ঘ সহিংসতার জন্য শিক্ষা, কর্মসংস্থান, অর্থনীতি- সবদিক থেকেই পিছিয়ে অঞ্চলটি।

মোরো রেবেল আর্মির কমান্ডার গ্যারেক্স আজিলা বলেন, বাংসামোরোতে নিজ মাতৃভূমিতে শান্তিতে জীবনযাপন করতে চাই আমরা। ফিলিপাইনের অধিকাংশ মানুষই আমাদের আপন ভাবতে নারাজ। তাদের দৃষ্টিতে আমরা তাদের শত্রু। তাই লড়াই ছাড়া আমাদের অন্য পথ ছিল না।

চুক্তির ফলে বাংসামোরো আঞ্চলিক সরকার, নিজস্ব পার্লামেন্ট, বিচার ব্যবস্থা আর গুরুত্বপূর্ণ সব অর্থনৈতিক অধিকার পাবে মোরোরা। ধীরে ধীরে মূলধারার রাজনীতিতেও আত্মপ্রকাশ করবে তারা। যদিও, পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিচালিত হবে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনেই। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে নতুন বিদ্রোহের শঙ্কা এড়াতে অস্ত্রসমর্পণ করবে প্রায় ৪০ হাজার মোরো যোদ্ধা।

মোরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মুরাদ ইব্রাহিম বলেন, আমাদের জন্য এটা বিশাল সুখবর। আশা করছি, এবার সত্যিকার অর্থে মোরোদের অবস্থার পরিবর্তন হবে। এ অঞ্চলের উন্নয়নে আর কোনো বাধা থাকবে না।

মোরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্টের সাথে ক্ষমতাসীনদের এই চুক্তিকে দুতের্তে সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

যমুনা অনলাইন: এটি


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply