ফক্স নিউজ ছাড়লেন টাকার কার্লসন

|

টাকার কার্লসন। ছবি: সংগৃহীত

ফক্স নিউজ ছেড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘হায়েস্ট রেটেড’ সঞ্চালক টাকার কার্লসন। ফক্সের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ফক্স নেটওয়ার্ক এবং কার্লসন ‘আলাদা হয়ে যাওয়ার’ ব্যাপারে একমত হয়েছেন। যদিও এর কারণ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি। বিবিসির খবর।

ফক্স নিউজে ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রাত্রিকালীন রাজনৈতিক টক শো টাকার কার্লসন টুনাইট সঞ্চালনা করে আসছিলেন এই আলোচিত সঞ্চালক। কার্লসনের সর্বশেষ শো প্রচারিত হয় গত ২১ এপ্রিল। ফক্স নিউজের ‘প্রাইম টাইমে’ সম্প্রচারিত হতো কার্লসনের অনুষ্ঠান। কার্লসনের পর স্থায়ী কোনো সঞ্চালককে না পাওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন কয়েকজন উপস্থাপককে দিয়ে ফক্স নিউজ অনুষ্ঠান করাবে বলে জানা গেছে।

দুই প্যারার একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে টাকার কার্লসনের ফক্স নিউজ ছাড়ার কথা জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তাদের নাম প্রকাশ না করে দ্য লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস জানিয়েছে, কার্লসনকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত এসেছে ফক্স নিউজের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে; যার মাঝে আছেন ফক্স নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান রুপার্ট মারডক ও তার ছেলে ল্যাচলান।

ছবি: সংগৃহীত

৫৩ বছর বয়সী টাকার কার্লসন কেবল জনপ্রিয় সঞ্চলকই নন, যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়ার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বও বটে। কনজার্ভেটিভদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তিনি অনেকটা প্রকাশ্যেই কাজ করে থাকেন। রিপাবলিকান পার্টিকে সহায়তা দেয়া ও তাদের জনসমর্থন বৃদ্ধির কাজেও অনেক সময় তা গড়িয়েছে। তার অনুষ্ঠানে অভিবাসন, অপরাধ, জাতি, লিঙ্গ, যৌনতার মতো রিপাবলিকানদের জন্য জনতুষ্টিবাদী ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই সাথে, ‘ওয়োক’ মতাদর্শের দিকেও নিয়মিতই কামান দাগিয়েছেন কার্লসন।

নিলসেনের তথ্য-উপাত্ত অনুসারে, ২৭ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাবল টিভির অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ রেটিং পাওয়া ১০টি অনুষ্ঠানের মধ্যে কার্লসনের টক শোটি ছিল শীর্ষ চারে। তিনি ফক্স নিউজের অন্যতম জনপ্রিয় সঞ্চালক। প্রতি রাতে গড়ে ৩০ লাখের বেশি দর্শক তার অনুষ্ঠান দেখে থাকে।

মাত্র কিছুদিন আগেই বিশাল অংকের অর্থ দিয়ে নির্বাচনী সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ডমিনিয়নের করা মানহানির মামলার নিষ্পত্তি করেছে ফক্স করপোরেশন। যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডমিনিয়ন ভোট চুরির পরিকল্পনায় জড়িত ছিল বলে সংবাদ প্রচার করেছিল ফক্স। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, ডমিনিয়নের তৈরি করা এই নির্বাচনী সরঞ্জামের মাধ্যমে কারচুপি করে হারিয়ে দেয়া হয় ট্রাম্পকে। ওই খবরকে মিথ্যা ও অগ্রহণযোগ্য দাবি করে ফক্সের বিরুদ্ধে মামলা করে ডমিনিয়ন। তাদের অভিযোগ ছিল, ফক্স জেনেশুনেই এ রকম খবর প্রচার করেছিল। সেই মামলা নিষ্পত্তির কিছুদিন পরই এলো কার্লসনকে ছাঁটাইয়ের খবর।

ছবি: সংগৃহীত

টাকার কার্লসন প্রকাশ্যেই ঘোষণা দেন যে, রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে তিনি অনেকাংশে একই শিবিরের। ট্রাম্পের সাথে রাজনৈতিক বিষয়ে খুব কমই ভিন্নমত পোষণ করে থাকেন তিনি। তবে, ট্রাম্প তার নিজের রাজনৈতিক ভাবনা থেকে বিচ্যুত হলে তার সমালোচনা করতেও আগ্রহী বলে জানিয়েছিলেন কার্লসন। ধারণা করা হয়, ইরান থেকে ২০১৯ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মতো ট্রাম্পের কিছু বড় সিদ্ধান্তে প্রভাব ছিল টাকার কার্লসনের।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply