স্কুলের পাওনা পরিশোধ না করতে পেরে ভয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা!

|

স্টাফ রিপোর্টার, জামালপুর:

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, বিদ্যালয়ের পাওনা পরিশোধ করতে না পেরে শিক্ষকের লজ্জার হাত থেকে বাঁচতে লাভনী আক্তার নামে ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।

সোমবার (৫ জুন) সকালে তারাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লাভনী আক্তার উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের মুদি দোকানদার লাল মিয়ার মেয়ে। সে রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো।

স্থানীয় ও পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ৭ জুন অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য লাভনীকে বকেয়া বেতন ও পরীক্ষার ফি বাবদ ২ হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে জানায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এর আগে বেতন নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করতে না পারায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নানাভাবে অপমান-অপদস্ত করেছে বলে অভিযোগ আছে। তাই সোমবার সকালে টাকা চাইলে লাভনীর পরিবার অর্ধেক টাকা জোগাড় করে দেয়। তবে কর্তৃপক্ষের কাছে লজ্জা পাওয়ার ভয়ে এ দিন ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে লাভনী।

লাভনী আক্তারের মা ফাহিমা বেগম বলেন, অর্ধেক টাকা জোগাড় করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু লাভলী অপমানিত হওয়ার ভয়ে সে টাকা নিয়ে স্কুলে যায়নি। পরে ঘরের ধর্নার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

তারাকান্দি গ্রামের হাবু মিয়া অভিযোগ করেন, রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোনো বিষয়ে এক টাকাও কম নেন না। তার কাছে কোনো অনুরোধই কাজে আসে না। ওই বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, তার মেয়ের বেতন দিতে একদিন দেরি হয়েছিল। এ কারণে ওই শিক্ষার্থীকে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুর রহমান বাছেদ বলেন, বিদ্যালয়ের পাওনা টাকা আদায়ের জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে চাপ দেয়া হয় না। কোনো শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে থাকলে সেটা হয়তো অন্য কোন বিষয় করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

এ নিয়ে সরিষাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফয়সাল আহমেদ বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ দানের অনুমতি দেয়া হয়েছে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply